অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জ্ববাবে এ কথা জানান তিনি। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সার্বিকভাবে অর্থনীতি খারাপ অবস্থায় আছে, তা নয়। একটা বিষয় হয়েছে- ব্যবসা-পাতিতে মন্দা, আয়ের উৎস কিছুটা কম। কিন্তু একেবারে ধ্বংসের পথে এমনটি নয়। সে অবস্থা থেকে অর্থনীতিকে বর্তমান সরকার উদ্ধার করেছে। তবে এখনো নতুন এমপ্লয়মেন্ট (কর্মসংস্থান) কম হচ্ছে। সেটা নিয়ে একনেকেও কথা হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। সম্প্রতি এসএমই খাতের ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়ার জ্বন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে বলা হয়েছে।
ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় প্রকল্পগুলো নিয়ে সরকারের অবস্থান কী জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এলওসি নিয়ে কথা হয়েছে। এলওসি পার্টিকুলার দেশে আসে। তাই দেরি হওয়া মানে আমরা প্রজেক্টটা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করি, অনেকে বলে বন্ধ, না সেটা সম্ভব না। একটা প্রজেক্ট হয়েছে, সেটা যে সরকারই করুক এবং ভারত সাহায্য দিচ্ছে, এগুলো প্রয়োজ্বনীয়। অব্যাহত রাখার জ্বন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কয়েকটি প্রকল্পের অগ্রগতি শূন্য থেকে দুই-এক শতাংশ, সেগুলো দেখা হবে। তবে আপাতত সার্বিকভাবে বন্ধ করার বিষয় নেই। এখানে অর্থনৈতিক দিক ছাড়াও দ্বিপাক্ষিক একটা বিষয় আছে। একটা দেশের সঙ্গে যখন দ্বিপাক্ষিক বিষয় থাকে তখন ওই দেশের প্রাইভেট সেক্টর হোক, সরকার হোক সাহায্য-সহযোগিতার জ্বন্য অর্থনীতি দেখি না। অর্থনীতির জ্বন্য একটা প্রকল্প নেয়া হয়, কিন্তু ক্যান্সেল করা খুবই সেনসেটিভ ব্যাপার। এ ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট যত্নবান। চট করে ক্যান্সেল করে দেব না। চট করে আমরা কিছু নিচ্ছিও না।
পোশাক খাত নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গার্মেন্টসে সরকার নগদ প্রণোদনা অব্যাহত রেখেছে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আছে তাদের ম্যানেজ্বমেন্টের দোষ আছে, কিছু আছে প্রোডাক্টের ডিমান্ড তেমন নেই। সেগুলোর জ্বন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। বেক্সিমকোর ১৪টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, বেক্সিমকোরটা ইউনিক চ্যালেঞ্জ্ব। ওদের দোষে, করাপশনের দোষ, আর ম্যানেজ্বমেন্টের দোষ। প্রাইভেট দায় সরকারের ঘাড়ে দেয়া ঠিক না। সরকারের টাকা মানে তো জ্বনগণের টাকা। ওটা তো অন্য কাজে ব্যয় করতে হয় আমাদের। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক বিষয় আছে। তাদের প্রতি (বেক্সিমকোর শ্রমিক) আমাদের নজ্বর আছে। তাদের পাওয়া পরিশোধে সরকার টাকা দিচ্ছে। তাছাড়া কাজ্ব হারা শ্রমিকদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জ্বন্য বিডার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনের সঙ্গে কথা হয়েছে। এসবসহ আরও কোনো কোনো জায়গায় বিকল্প কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাজার ব্যবস্থা নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট। আরেকটু বেটার হলে ভালো হতো। গত বছরের তুলনায় অনেক পণ্যের দাম এখন কম। তারপরও নিম্ন আয়ের কিছু মানুষের কষ্ট হচ্ছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।
সামনে গরম আসছে, জ্বালানি সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এলএনজি সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই। আজ্বকের বৈঠকে দুই কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। দাম কম বা বেশি যাই হোক সরবরাহ নিশ্চিতের চেষ্টা করছে সরকার।