বর্ণাঢ্য আয়োজনে দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো উদযাপিত হয়েছে ‘কৃষক দিবস-২০২৫’। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রসারণ কেন্দ্র (বাউএক) এবং বাকৃবি প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবসটি পালন করা হয়। কৃষকবান্ধব প্রযুক্তির সম্প্রসারণ হউক আমাদের অঙ্গীকার- এই প্রতিপাদ্যে কৃষকদের মধ্যে নতুন প্রযুক্তির সম্প্রসারণ, সচেতনতা বৃদ্ধি ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই দিবস উদযাপতি হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল বেলা ১১টার দিকে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়ার নেতৃত্বে কৃষক র্যালির বের করা হয়।
৩০০ জন কৃষক-কৃষানির অংশগ্রহণে র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন চত্বর থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণের পর শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। এরপর সেখানে কৃষকদের নিয়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাকৃবি সম্প্রসারণ কেন্দ্রের (বাউএক) পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাকৃবির ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শহীদুল হক, ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান। এছাড়াও বাউরেসের পরিচালক ড. হাম্মাদুর রহমান, প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রুহুল আমিনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।এসময় প্রতিযোগিতামূলক সবজি বাগান চাষে সেরা ছয়জন কৃষক-কৃষানিকে ক্রেস্ট, সনদপত্র ও বীজ তুলে দেয়া হয়। তারা হলেন- দুই বিঘা জমিতে ব্রোকলি চাষ করা সুহিলার আব্দুল খালেক, পৌনে দুই একর জমিতে কলা চাষ করা বয়ড়ার আবদুর রাজ্জাক, শৈলমারীর আদর্শ সবজি চাষি আব্দুল করিম, সমন্বিত পোলট্র্রি খামারি মুক্তিযোদ্ধা বাজারের মোছা. নুরুন্নাহার, বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি চাষি ভাবখালীর হাসনা খানম এবং আদর্শ পোল্ট্রি খামারি মির্জাপুরের আব্দুল হক। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, বাকৃবি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কৃষকের পাশে থেকে গ্রামীণ অর্থনীতি বিনির্মানে কাজ করছে। চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ ছাড়া স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ কখনও খাদ্য সংকটে পড়েনি। এর জন্য বাকৃবির অবদান অনস্বীকার্য। বিশ্বায়নের ফলে বাংলাদেশের কৃষিও প্রতিনিয়ত আধুনিক হচ্ছে। ২০ বছর আগেও যা কল্পনা করা যেত না, এখন সেগুলো কৃষকের মাঠে উৎপাদিত হচ্ছে। কৃষকদের যথাযথ মূল্যায়ন করতেই আমরা কৃষক দিবস উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি আরো বলেন, প্রন্তিক পর্যায়ে কৃষকের ফসলের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও আয়বৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নে কাজ করছে বাকৃবি সম্প্রসারণ কেন্দ্র (বাউএক)। গ্রামীণ কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য যেন বাকৃবিতে এনে বিক্রি করতে পারে, সেজন্য উদ্যোগ নিতে হবে এবং এই কাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহায়তা করবে। আমরা আরো কৃষিবান্ধব হতে চাই। কৃষকদের জন্য কৃষিকে নতুন করে সাজাতে সকল স্তরের সহযোগিতা প্রয়োজন। দিনব্যাপী অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে ছিল- কৃষকদের কাছে কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও প্রশিক্ষণ, কৃষকদের জন্য বাকৃবির খামার পরিদর্শন এবং বীজ বিতরণ কর্মসূচি।