টাঙ্গাইলের সখীপুরে সরকারি অর্থায়নে স্থাপিত সোলার স্ট্রিট লাইটগুলোর অধিকাংশই বর্তমানে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, হাট-বাজার ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংলগ্ন এলাকায় স্থাপিত এসব সোলার লাইটের প্রায় শতাধিক লাইট এখন আর আলো দেয় না। দিনের পর দিন পড়ে থাকা এই অব্যবস্থাপনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। উপজেলার হামিদপুর, দেওদিঘী, পলাশতলী, হেংগারচালা, কুতুবপুর বাজার, নলুয়া, বেড়বাড়িসহ পৌরসভার কয়েকটি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ সোলার প্যানেলে ধুলো জমে আছে, অনেক জায়গায় ব্যাটারি চুরি হয়েছে বা খোলার ঢাকনাগুলো ভাঙা, লাইটের পোস্ট হেলে পড়েছে এবং খুঁটিসহ ভেঙে পড়ে আছে।
চকপাড়া গ্রামের সফিকুল ইসলাম বলেন, প্রথমে সরকার ভালো উদ্যোগ নিয়েছে ভেবে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু কয়েক মাস যেতে না যেতেই লাইটগুলো কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এখন রাস্তাগুলো আবার অন্ধকার, চুরি-ছিনতাইয়ের ভয় বাড়ছে। একই অভিযোগ করে পৌরসভার ব্যবসায়ী রবিন মিয়া বলেন, লাইট বসানোর পর কেউ আর খবর নেয় না। অনেক প্যানেল এখনও সূর্যের দিকে ঘোরানোই না।
এটা টাকা নষ্ট ছাড়া কিছু না। পলাশতলী বাজারের চা দোকানদার হবি মিয়া বলেন, ব্রিজের পাশে একটি সোলার লাইটের পোস্ট হেলে পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সরকার শহিদ বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার উন্নয়নের নামে লোক দেখানো প্রকল্প চালিয়েছিল। এসব সোলার লাইট প্রকল্পের পেছনে কোটি কোটি টাকা খরচ করে জনগণের টাকায় লুটপাট করে নিয়ে গেছে। নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ করার কারণে লাইটগুলোর এ অবস্থা। এর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া দরকার।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ওয়াসীম মিয়া বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে প্রকল্পটি বন্ধ রয়েছে। আর যেসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লাইটগুলো স্থাপন করা হয়েছিল, তাদের চুক্তির মেয়াদ শেষ। এখন নতুন করে বরাদ্দ না পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল রনী বলেন, সোলার লাইট গুলো মেরামতের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ পেলে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত এসব লাইট সংস্কার না করলে রাতে চলাচলে ঝুঁকি বাড়বে। পাশাপাশি তারা চান, ভবিষ্যতে প্রকল্প গ্রহণের সময় মান নিয়ন্ত্রণ এবং দীর্ঘমেয়াদি রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হোক।