ঢাকা বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কুষ্টিয়ায় সেতুর টোল আদায় বন্ধের দাবি

কুষ্টিয়ায় সেতুর টোল আদায় বন্ধের দাবি

কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমারখালীর গড়াই নদীর ওপর নির্মিত সৈয়দ মাসুদ রূমী সেতুর টোল আদায় বন্ধের দাবিতে প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সেতুর টোলপ্লাজা এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। এতে সেতুর দুইপাশে প্রায় ৮-১০ কিলোমিটার দীর্ঘদিন যানজট সৃষ্টি হয়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন হাজারও পথচারীরা।

পরে জনদুর্ভোগের খবর পেয়ে ছুটে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মিকাইল ইসলাম এবং সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম, সেনাবাহিনী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা দুইদিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেন এবং সেনাবাহিনী যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।

কুমারখালী নাগরিক কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য কেএমআর শাহীন বলেন, সেতুর নির্মাণ ব্যয় অনেক আগেই উঠে গেছে। তবুও সরকারি আমলারা টোলের নামে চাঁদাবাজি করার পাঁয়তারা করছে। স্থায়ীভাবে টোল বন্ধের দাবিতে আমরা আজ কর্মসূচি পালন করছি। তার ভাষ্য, সড়ক অবরোধ থাকায় চরম জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা জামায়েতের নায়েবে আমীর আফজাল হোসাইন বলেন, টোলের নামে জনগণের আর পকেট কাটতে দেওয়া হবেনা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকা হবে।

সওজ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালে ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করে সওজ। ২০০৫ সাল থেকে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ইজারাদারের মাধ্যমে টোল আদায় করা হয়। ২০২৪ সালের জুন মাসে তিন বছর মেয়াদি ইজারা শেষ হলে খাস আদায় করছে সওজ বিভাগ। প্রতিদিন তিন-চার লাখ টাকা খাস আদায় করত তারা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ৭ আগস্ট সকালে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে টোলপ্লাজায় আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। সে সময় টোলপ্লাজা ছেড়ে পালিয়ে যান আদায়কারী। ১৩ আগস্ট সওজ কর্তৃপক্ষ টোল আদায় করতে গেলে বিক্ষুব্ধ জনতা বাধা দেয়। এরপরও কয়েক দফা হামলা হয়েছে। নিরাপত্তার অভাবে সেখান থেকে চলে আসেন কর্মকর্তারা। এরপর থেকে টোল আদায় বন্ধ রয়েছে। এতে সরকার প্রতিদিন তিন-চার লাখ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।

আয়োজকদের পক্ষে উপজেলা গণতন্ত্র ছাত্র সংসদের জ্যেষ্ঠ সংগঠক আলামিন হোসেন আকাশ বলেন, স্থায়ী টোল বন্ধ এবং টোল ঘর অপসারণের দাবিতে আমরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছি। প্রশাসন ও সওজের পক্ষ থেকে দুইদিন সময় চেয়েছেন। দুইদিনের মধ্যে টোল বন্ধের প্রজ্ঞাপন জারি করা না হলে ডিসির কার্যালয় ঘেরাও করা হবে।

১৩ আগস্ট থেকে টোল আদায় বন্ধ থাকায় প্রায় ১১ কোটি টাকা রাজস্ব হারিয়েছে সরকার বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম। তিনি বলেন, আন্দোলনকারীদের দাবির কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দুইদিনের মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

তবে এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মিকাইল ইসলাম। বলেন, জনগণের দাবির বিষয়টি ডিসি স্যার ও সওজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত