বাংলা সাহিত্যের অমৃত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সাগরদাঁড়িতে ৭ দিনব্যাপী মধুমেলা গত বৃহস্পতিবার রাতে শেষ হয়েছে। মধুমেলা উপলক্ষে সাগরদাঁড়ির মেলার মাঠ, জমিদারবাড়ির আম্রকানন, কবিরস্মৃতি বিজড়িত বুড়ো কাঠবাদাম গাছ তলা, বিদায়ঘাটসহ মধুপল্লী এলাকা জুড়ে ছিল প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মধুভক্তদের মুখরিত পদচারণা। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ এ মেলা মধুভক্ত লাখো দর্শনার্থীদের প্রাণের ছোঁয়ায় পরিণত হয় মিলন মেলার। এ বারের মেলায় মধুমঞ্চে মধুসূদনের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনায় মধুপ্রেমী দর্শনার্থীরা মুগ্ধ হন। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কবিতা আবৃত্তি ও নাটক উপভোগ করার জন্য মধুভক্তদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
মধুমেলায় লাখো মধুভক্ত আর ভ্রমণ পিপাশুদের পদচারণায় মেলাঙ্গণ সরব হয়ে ওঠে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাজার হাজার নারী পুরুষ, কিশোর-কিশোরী, শিশুসহ সব বয়সের শ্রেণিপেশার মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে মেলার মাঠে মধুমঞ্চে অনুষ্ঠিত আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক, কবিতাবৃতিসহ উন্মুক্ত মঞ্চে যাত্রাপালা দেখে মুগ্ধ হন। পাশাপাশি মেলায় সার্কাস, শুন্যে মোটরসাইকেল চালনা, যাদু, ইঞ্জিনচালিত ট্রেন, নাগরদোলা, ডিজিটাল নৌকা চড়া স্পটগুলোতে শিশু, কিশোর-কিশোরীরাসহ নানা বয়সী মানুষ আনন্দে মেতে উঠে। আবার কেউ কেউ মেলার মাঠে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রীসহ সাংসারিক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা কাটায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন।
মাঠে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মধুভক্তরা ঘুরে ফিরছেন নিরাপদে। দুরদুরান্তের দর্শকরাও গভীর রাত অবধি ঘুরে ঘুরে উপভোগ করছেন মেলা। এ বারের মেলায় প্রতিটি স্টলেই আসা মধুপ্রেমী দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি বেচাকেনা হয়েছে শিশুদের খেলনা জাতীয় দ্রব্য। রেশমী চুড়িসহ মেয়েদের সাজগোজের অন্যান্য মালামালও বিক্রি হয়েছে প্রচুর। মেলার মাঠে এবার নানা ধরনের স্টলসহ ছোট বড় মিলে প্রায় ৩ সহস্রাধিক দোকান বসে। উল্লেখ্য গত ২৪ জানুয়ারি খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকার প্রধান অতিথি হিসেবে মধুমেলার উদ্বোধন করেন।