মাঘ মাসের চলমান শীতের সঙ্গে ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন থাকছে আকাশ। ঈশ্বরদীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি থেকে ১২ ডিগ্রিতে ওঠানামা করছে। ঘন কুয়াশার কারণে এরই মধ্যে বোরোধানের বীজতলার চারাগুলো গাঢ় সবুজ থেকে ক্রমেই কুঁকড়ে হলুদাভ হয়ে পড়ছে। কৃষি বিভাগ বলছে, ১৮ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা প্রবাহিত হলে বোরোসহ অন্যান্য ফসলের বীজতলাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থা বিরাজমান থাকলে বোরো ধানের চারা তুলে জমিতে রোপণ করার মতো অবস্থায় থাকবে না। এতে বোরো আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে কৃষকরা আশঙ্কা করছেন। সরেজমিনে সাঁড়া গোপালপুর এলাকার মাঠে দেখা যায়, বোরো ধানের কচি বীজতলার চারাগুলো শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশায় আক্রান্ত হয়ে গাঢ় সবুজ থেকে ক্রমেই কুঁকড়ে হলুদাভ হয়ে পড়ছে।
কৃষকরা বলছেন, এই অবস্থা আরো এক সপ্তাহ চললে বোরো ধানের চারা তুলে জমিতে রোপণ করার অবস্থায় থাকবে না, এতে এ বছরে বোরো আবাদও হুমকির সম্মুখীন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
কৃষি অফিসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ঈশ্বরদীতে এবার ৪৪ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের বীজতলায় ধানের চারা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ঘন কুয়াশা ও নিম্নমুখি তাপমাত্রার কারণে এখনো অর্ধেক বীজতলা প্রস্তুত করা যায়নি। যেটুকু হয়েছে তার অধিকাংশই ক্ষতির মুখে পড়েছে শৈত্যপ্রবাহের কারণে। বীজতলায় আলাদা যত্ন নিয়েও হলুদাভ হওয়া থেকে রক্ষা করা যাচ্ছে না ধানের চারা। বীজতলা ঢেকে রাখার পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন কুয়াশা ঝেড়ে ফেলা ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষি বিভাগ থেকে। মাজদিয়া এলাকার কৃষক মমিনুল জানান, চারা রোপণ করার যোগ্য হয়ে ওঠার আগেই বীজতলা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। কুয়াশার প্রভাব থেকে কোনো ভাবেই প্রতিরোধ যাচ্ছে না। ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মাঘ মাসের শুরু থেকেই প্রচণ্ড শীতের সাথে ঘন কুয়াশার কারণে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রির নীচে রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার মিতা সরকার বলেন, ১৮ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা প্রবাহিত হলে বীজতলা ক্ষতির মুখে পড়ে। সেখানে ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি থেকে ৮.৬ ডিগ্রিতে ওঠানামা করছে। এই অবস্থায় ল্যমাত্রার ৪৪ হেক্টর জমির মধ্যে মাত্র ২১ হেক্টর জমিতে বীজতলায় বোরো ধানের চারা প্রস্তুত হয়েছে। বাকি জমিতে এখনো চারা দেয়া সম্ভব হয়নি। কুয়াশা থেকে চারা রক্ষা করতে বীজতলা ঢেকে রাখা, প্রতিদিন সকালে চারায় জমে থাকা কুয়াশা ঝেড়ে ফেলা ও নিয়ম করে সেচ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে কৃষকদের। এর পরও বীজতলার চারা সবুজ রাখতে সালফার জাতীয় ছত্রাকনাশক প্রয়োগ এবং রাতে সাদা পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।