বগুড়ায় রবি শস্য মৌসুমে সরিষার সিমে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। এ সময় ফুলে ফুলে মৌ মাছির মধু আহরণে নেই ব্যস্ত আনাগোনা। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই সরিষা সিমের দানা পরিপক্ব হচ্ছে। পাকা সরিষা ঘরে তুলতে বুকভরা স্বপ্নে বাম্পার ফলনের অপেক্ষার প্রহর গুণছেন কৃষকরা। বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলায় রবি শস্য চাষে খরচের হাত শূন্য হওয়ায় এ মৌসুমের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করেই ইরি-বোরো ধান চাষের খরচের জোগান দেয় কৃষকরা। কিছুদিনের মধ্যে জমি থেকে সরিষা উত্তোলনের পরপরই কৃষকরা বোরো ধান রোপণে মাঠে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। এরই মধ্যে জমিতে আগাম ইরি-বোরো ধান রোপণ শুরু করেছে কৃষক। হেমন্তকালে আমন ধান ঘরে তোলার পরপরই রবি শস্য চাষে ঝুঁকে পড়ে কৃষকরা। চলতি রবি শস্য মৌসুমে এবার বগুড়ার কাহালুতে বারি ১৪ ও ১৫ সরিষার হয়েছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে জমিতে সরিষা বোপণের উপযুক্ত সময়। বর্তমান বাজারে ভোজ্য তেল সয়াবিন, পামওয়েল ও সরিষা তেলের নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যবৃদ্ধিতে ভোক্তারা দিশেহারা হলেও চলতি রবি শস্য মৌসুমে সরকার বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রণোদনা দেয়ায় চাষিরা বুকভরা আশা নিয়ে সরিষা চাষে আগ্রহী হলেও ভরা মৌসুমে জমিতে আদ্রতা না পাওয়ায় কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে সরিষা চাষ করতে পারেননি। সরকার ভোজ্য তেলের আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে দেশীও ভাবে ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের পর্যাপ্ত পরিমাণে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রণোদনা দিয়েছে। যার পুরোপুরি সুফল পাবেন এসব কৃষকরা।
সরিষা চাষের ৮০-৮৫ দিনের মাথায় পাকা সরিষা ঘরে তোলে চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার সরিষা চাষে অধিক ফলনের আশা করছে কৃষকরা। কম খরচে সরিষা চাষে অধিক ফলন, বাজারে দাম ভালো পাওয়া সরিষা চাষ লাভজনক হওয়ায় এ চাষে দিন দিন চাষিদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলার নারহট্র ইউনিয়নের বোরাইল গ্রামের চাষি আবু তালেব ও নূরুল ইসলাম জানান, ভরা মৌসুমে জমিতে পানি থাকায় আদ্রতা অভাবে সরিষা চাষ কম হয়েছে। উন্নত জাতের সরিষা বীজ বোপণ করলে ১ বিঘা জমিতে ৬-৭ মণ সরিষা ফলন পাওয়া যায়। আমন ধান ঘরে তোলার পর জমিতে রবি শস্য মৌসুমে সরিষা চাষ করে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে।