সিরাজগঞ্জে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এরইমধ্যে ধান কাটা ও মাড়াই পুরোদমে শুরু হয়েছে। এতে কৃষক-কৃষানিরা ব্যস্ত সময় পার করছে। হাট-বাজারে নতুন ধান উঠছে এবং এখন দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা ১ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদ করেছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯ হাজার ১২৫ মেট্রিক টন। তবে এ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে। এ জেলার শষ্যভাণ্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জের চলনবিল এলাকার তাড়াশ, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ ও শাহজাদপুর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলে এ চাষাবাদ বেশি হয়েছে। এ বিল এলাকার ধান কাটা ও মাড়াইয়ের দৃশ্য দেখলেও মন জুড়িয়ে যায়। এছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এ চাষাবাদও ভালো হয়েছে এবং জেলার সবকয়টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন উন্নতজাতের ধান চাষ করেছে কৃষকরা। যথাসময়ে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে।
চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এ ধান কাটা ও মাড়াই পুরোদমে শুরু হয়েছে। রাত-দিন কৃষকের বাড়ি ও মাঠে টুঙ্গি তুলে এ ধান মাড়াইয়ের ধুম পড়েছে। এ নতুন ধান এখন হাট-বাজারে উঠছে। কৃষকরা বলছেন, এবার ইরি-বোরো চাষাবাদে খরচ অনেকটা কম হয়েছে। তবে ধান কাটা ও মাড়াই কাজে কামলার দাম এবার কিছুটা বেশি। তবে বাজারে এখন ধানের দাম ভালো রয়েছে। এছাড়া জমি থেকে ধান কাটার পর সেই জমিতেই পাট চাষাবাদও করা হচ্ছে। স্থানীয় হাট-বাজারে কৃষকের এ নতুন ধান কেনা-বেচারও প্রায় হিড়িক পড়েছে। বর্তমানে প্রতিমণ মিনিকেট ও কাটারি ভোগ ধান গড়ে সাড়ে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং ব্রি-২৯ ধানসহ অনান্য জাতের ধান গড়ে সাড়ে ১২০০ থেকে সাড়ে ১৩০০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা গুদামগুলোতে এখনো সরকারিভাবে ধান ক্রয় শুরু হয়নি। কৃষকরা বলছেন, সরকারি দামের চেয়ে হাট-বাজারে দামই ভালো। অবশ্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, খুব শিগগিরই ইরি-বোরো ধান সরকারের নির্ধারিত মূল্যে ক্রয় অভিযান শুরু হবে। এরইমধ্যে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার বলেন, এবার জেলায় ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা এ চাষাবাদে পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। এলাকাভিত্তিক এখন পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে এবং বাজারে এখন দাম ভালো থাকায় কৃষকের হাসি ফুটেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।