জীবন কখনও গোলাপের বিছানার মতো মধুর নয়। জীবনে থাকে সংগ্রাম, নানা বাধা। পার হতে হয় ঘাত-প্রতিঘাত। একেক ক্ষেত্রে একেকটা মানুষের জীবনযাপন করার ধরনটাও আলাদা, ফলে সংগ্রামের গল্পেও থাকে ভিন্নতা। সংগ্রাম আছে সবার জীবনেই। সংগ্রামের পথ পাড়ি দেওয়ার পর ধরা দেয় সাফল্য। তেমনই এক সফল উদ্যোক্তা জসিম মিয়া। মানুষের জমিতে কাজ করে জীবন নির্বাহ করতেন জসিম। অর্ধাহার-অনাহারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন তিনি। বোনজামাইয়ের পরামর্শ ও সহযোগিতায় লেয়ার মুরগির খামার করে সংসারে এনেছেন সচ্ছলতা। মুক্তি পেয়েছেন আর্থিক দৈন্যতা থেকে। ২ হাজার লেয়ার মুরগি থেকে এখন তার মাসিক আয় প্রায় ২ লাখ টাকা।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার দক্ষিণ কাকনহাটি গ্রামের লেয়ার খামারি মো. জসিম। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে লেয়ার মুরগি পালন করছেন। কঠোর পরিশ্রম আর অভিজ্ঞতার ফলে নিজেকে স্বাবলম্বী করতে সক্ষম হয়েছেন। মোকাবিলা করছেন জীবনের একটির পর একটি কঠিন ধাপ। দুই ছেলের পড়াশোনার খরচ, নিজের সংসারের খরচ ছাড়াও মিলছে বাড়তি আয়। খামার থেকে অর্জিত আয় দিয়ে ব্যাংক ঋণ শোধ করা, সংসারের খরচ মেটাতে সক্ষম তারা।
২০২০ সালের কথা বাবার দেয়া ৪ শতাংশ জমির ওপর ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে খামার শুরু করেছিলেন। হাতে টাকার সংকটে নিয়েছিলেন ব্যাংক ঋণ। এখন তিনি প্রায় অর্ধেক ব্যাংকঋণ শোধ করে খামারের আয়তনও বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। আগামীতে তার খামারটা আরও বড় করার জন্য চেষ্টা করছেন। তার সফলতা দেখে গ্রামের আরও দুইজন খামার স্থাপন করেছেন।
জসিম মিয়া জানান, প্রথমে একদিনের বাচ্চার পাইকারি এক ডিলারের কাছে থেকে ১১০০টি বাচ্চা কিনেছিলেন। এরপর বাড়ির পাশে পড়ে থাকা ফাঁকা জায়গাতে গড়ে তোলেন খামার। প্রথমে টাকার সংকুলান না হওয়ায় ১৫ লাখ টাকার মতো ঋণ নিয়েছিলেন। বর্তমানে খামারে রয়েছে ২ হাজার লেয়ার মুরগি। প্রায় ৯০ শতাংশ মুরগি ডিম পাড়ছে।
বাড়িতে বিদ্যুৎ লাইন থাকায় সহজেই পানির ব্যবস্থা করতে পেরেছেন তিনি। জসিম মিয়া বলেন, ডিম বিক্রির টাকা দিয়ে মুরগির খাদ্য, ওষুধ, ভ্যাকসিন কিনতে হয়। এখন খাদ্যেও দাম বাড়িয়েছে কোম্পানি। কিন্তু ডিমের দাম তেমন বাড়েনি। ৯ টাকাও বিক্রি করছি আবার সাড়ে ৮ টাকাও বিক্রি করছি।