কুষ্টিয়ায় জুলাই-আগস্ট ফ্যাসিবাদ সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিহত শহিদ ১৩ পরিবারের প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। রোববার দুপুর ১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাদের হাতে এ সঞ্চয়পত্র প্রদান করা হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সময় ১৩ শহিদ পরিবারের সদস্যদের হাতে ঈদ উপহারসামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো: জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো: তৌফিকুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শহিদ পরিবারের সদস্যদের হাতে এ সঞ্চয়পত্র ও উপহারসামগ্রী তুলে দেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ছাত্র প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আল-মামুন সাগর, শহিদ বাবলু ফারাজির ছেলে সুজন মাহমুদ, শহিদ সবুজের স্ত্রী রেশমা খাতুন বক্তব্য রাখেন।
জেলা প্রশাসক মো: তৌফিকুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহত শহিদ পরিবারকে নিরাপত্তাসহ সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব রকম সহায়তা প্রদান করা হবে। জেলা প্রশাসন সব সময় আপনাদের পাশে আছে। আপনাদের যেকোনো সমস্যা আমাদের নির্দ্বিধায় জানাবেন, আমরা আপনাদের পাশে থেকে সহযোগিতা করব। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মামলাগুলো যাতে আইনি প্রক্রিয়ায় যত দ্রুত সম্ভব নিষ্পত্তি করা যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ গহণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে শহীদ বাবলু ফারাজীর ছেলে সুজন মাহমুদ বলেন, আমরা থানায় মামলা করেছি। প্রায় এক বছর হতে চলল কিন্তু মামলার কোন রেজাল্ট হচ্ছে না, আমরা বিচার পাচ্ছি না। আসামিরা জামিনে বের হয়ে আমাদেরকে থ্রেট দিচ্ছে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। শহিদ পরিবারগুলো যেন কোনোভাবেই নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগে এ বিষয়টি খেয়াল রাখা দরকার।
অপর শহিদ সবুজের স্ত্রী রেশমা খাতুন বলেন, আসামিরা জামিনে বের হয়ে এই বলে হুমকি দিচ্ছে তোর স্বামীকে তো খুন করেছি তোর দুই সন্তান কেউ খুন করব। স্বামীকে হারিয়েছি সন্তানকে আর হারাতে চাই না।
প্রসঙ্গত, কুষ্টিয়ায় জুলাই-আগস্ট ফ্যাসিবাদ সরকারবিরোধী আন্দোলনে ১৩ জন শহিদ হন। আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন তারা হলেন- জামাল উদ্দিন শেখ, আব্দুস সালাম, কামাল উদ্দিন, বাবলু ফরাজি, সুরুজ আলী, উসামা, ইউসুফ শেখ, আব্দুল্লাহ আল মুস্তাকিন, আশরাফুল ইসলাম, সেলিম মন্ডল, জুবায়ের আহমেদ, আলমগীর শেখ ও মারুফ হোসেন।