ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সাতকানিয়ার কেরানিহাটে অবৈধ যান চলাচল

সাতকানিয়ার কেরানিহাটে অবৈধ যান চলাচল

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্র কেরানিহাট, যা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এবং বান্দরবান-চট্টগ্রাম এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের স্টেশন ও মিলনস্থল। প্রতিদিন হাজার হাজার স্থানীয় বাসিন্দা এবং দেশের প্রধান দুটি পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার ও বান্দরবানে যাতায়াতকারী পর্যটকদের জন্য এটি একটি অপরিহার্য স্টেশন। পর্যটন, বাণিজ্য ও গণপরিবহন সবকিছু মিলিয়ে এই স্টেশন প্রতিদিন লক্ষাধিক যাত্রীর চলাচলের কেন্দ্রবিন্দু। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি এখন অসহনীয় যানজটের কবলে।

প্রশাসনের একাধিক উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার পরও কোনোভাবেই যানজট নিরসন সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলা প্রশাসন ফুটপাত দখলমুক্ত করা, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ রাস্তা প্রসস্থ করার মতো একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে, কিন্তু বাস্তবে যানজট পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি।

প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ত্রি-হুইলার সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার অবাধ চলাচল ও স্টেশনে যত্রতত্র অবস্থান। যা সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হলেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় অবাধে চলছে।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মহাসড়কে ত্রি-হুইলার চলাচল নিষিদ্ধ হলেও কেরানিহাটে নিয়মণ্ডনীতি কার্যত উপেক্ষিত। গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশন এবং প্রধান সড়ক দখল করে আছে ধারণ ক্ষমতার বাইরে বিপুলসংখ্যক থ্রি-হুইলার। এতে যানজট চরম আকার ধারণ করছে এবং সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা এই মহাসড়ককে দেশের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক হিসেবে বিবেচনা করছেন। সম্প্রতি চন্দনাইশ এলাকায় এক স্কুলছাত্রী বাস ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালে প্রশাসন তৎপর হয়। হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশ সতর্কতা প্রচার শুরু করে। কেরানিহাট স্টেশন ও প্রধান সড়কে ত্রি-হুইলার চলাচল বন্ধের জন্য মাইকিং শুরু করে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এই নির্দেশনার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে; ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত ত্রি-হুইলার স্টেশন ও প্রধান সড়কে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে।

বাস্তবে তেমন কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। এই অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের কারণেই দেশের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ মহাসড়ক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক।

ট্রাফিক ইন্সপেক্টর নূরে আলম জানান, এই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আমরা নিরলসভাবে কাজ করছি। কিন্তু জনবল সংকটে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এক শিফটে অন্তত ৬ জন সদস্য প্রয়োজন হলেও বর্তমানে মাত্র ৩ জন করে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি স্বীকার করেন যে, ত্রি-হুইলারগুলো ট্রাফিক আইন অমান্য করছে, তবে তারা সাধ্যমতো তা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট মুজাম্মেল হক আবদুল্লাহ বলেন, এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ জরুরি। তিনি আশাপ্রকাশ করেন যে, ত্রি-হুইলার যান নিয়ন্ত্রণ করা গেলে যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনার হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। দোহাজারি হাইওয়ে থানার ওসি মাহবুবে আলম জানান, থ্রি-হুইলার যানবাহন প্রধান সড়কে ও স্টেশনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং সরকারি আদেশ অমান্য করছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত