সাম্প্রতিক বিবর্ণতা ঝেড়ে ফেলে আপন রূপে ফিরলেন লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেস। দলের সবচেয়ে বড় দুই তারকা জ্বলে ওঠায় বদলে গেল ইন্টার মায়ামির চেহারাও। সাম্প্রতিক হতাশাময় সময় পেছনে ফেলে আদায় করে নিল তারা দারুণ এক জয়। মেজর লিগ সকারে বাংলাদেশ সময় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিএফ মন্ট্রিয়লকে ৪-২ গোলে হারায় ইন্টার মায়ামি। দুটি করে গোল করার পাশাপাশি একটি করে গোলে সহায়তা করেন মেসি ও সুয়ারেস। দুজনেরই সেই অ্যাসিস্ট ছিল দর্শনীয়। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে আগের আট ম্যাচের মধ্যে মায়ামির জয় ছিল স্রেফ একটি। এই জয়ে লিগে টানা চার ম্য্যাচের জয়হীন ধারাও শেষ করতে পারল তারা।
এই ম্যাচের আগে গোটা মৌসুমে লিগে সুয়ারেসের গোল ছিল স্রেফ দুটি। তার ছন্দে ফেরাও মায়ামির জন্য বড় স্বস্তি। মায়ামির মাঠে এই ম্যাচে গোলের কাছাকাছি প্রথম যায় অবশ্য মন্ট্রিয়ল। অষ্টম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ন্যাথান সালিবার বাঁকানো শট অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। মেসি অবশ্য বাইরে পাঠাননি। ২৭তম মিনিটে সের্হিও বুসকেতসের কাছ থেকে বল পেয়ে একটু এগিয়ে বক্সের বাইরে থেকে গড়ানো কোনাকুনি শট নেন দুই ডিফেন্ডারের পাশ দিয়ে। বল পোস্টে লেগে জড়িয়ে যায় জালে। ৩০তম মিনিটে গোল শোধ করার সুবর্ণ সুযোগ হারায় মন্ট্রিয়ল। গোলকিপার সামনে একা থাকলেও ভলিতে গোল করতে পারেননি জ্যাকোবো ভ্রিওনি। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আলবেনিয়ার এই ফরোয়ার্ডের শটই একটুর জন্য বাইরে চলে যায়। ৫৯তম মিনিটে মাঝমাঠের একটু ওপর থেকে জাদুকরী এক পাস দেন মেসি। তাদেও আইয়েন্দে বল ধরে বক্সের ভেতর এগিয়ে দূরের পোস্টে শট নিলেও একটু বাইরে দিয়ে চলে যায়। মিনিট চারেক পর সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মেসি নিজেও। ৬৮তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দান্তের সিলির গতিময় শট ফিরিয়ে দেন মায়ামির গোলকিপার অস্কার উস্তারি। ফিরতি বলে কাছ থেকে শট নেন মন্ট্রিয়লের একজন। এবার পা দিয়ে ঠেকান উস্তারি। পরমুহূর্তেই পাল্টা আক্রমণে বক্সের ভেতর একজনকে এড়িয়ে দুই ডিফেন্ডারের পাশ দিয়ে মেসি দারুণভাবে বল দেন সুয়ারেসকে। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা ফরোয়ার্ড গোল করেন নিখুঁত ফিনিশিংয়ে। সুয়ারেসের ক্যারিয়ারের ৫০০তম গোল এটি। এটির আগে সবশেষ গোল করেছিলেন তিনি গত ৩ মে। মিনিট তিনেক পরই মন্ট্রিয়লের ডিফেন্ডার জর্জ ক্যাম্পবেলের ভুল কাজে লাগিয়ে দলকে আরও এগিয়ে দেন সুয়ারেস। মন্ট্রিয়ল অবশ্য লড়াই চালিয়ে যায়। ৭৪তম মিনিটে বক্সের ভেতর জটলার মধ্য থেকে মায়ামির দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে দারুণ দক্ষতায় গোল করেন সিলি। তবে তাদেরকে ম্যাচে ফিরতে দেননি মেসি। ৮৭তম মিনিটে সুয়ারেসের সঙ্গে ওয়ান-টু খেলে মন্ট্রিয়লের রক্ষণভাগকে বিভ্রান্ত করে একদম ফাঁকায় বল পেয়ে যান মায়ামি অধিনায়ক। ঠাণ্ডা মাথায় গোলকিপারের ওপর দিয়ে আলতো চিপ করে দলের চতুর্থ আর নিজের দ্বিতীয় গোল করেন তিনি। যোগ করা সময়ে মন্ট্রিয়ল আরেকটি গোল ফিরিয়ে দেয় বটে। তবে তা কেবল ব্যবধান একটু কমায়। ম্যাচে আর উত্তেজনা ফেরেনি। ১৫ ম্যাচে সাত জয় আর তিন পরাজয়ে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে ইস্টার্ন কনফারেন্সের পয়েন্ট তালিকায় ছয়ে আছে মায়ামি। ১৬ ম্যাচে স্রেফ এক জয় আর পাঁচ ড্রয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে সবার নিচে মন্ট্রিয়ল।
