ঢাকা শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

দরুদ পাঠের ফজিলত

মাওলানা কেফায়তুল্লাহ
দরুদ পাঠের ফজিলত

বিশেষ ফজিলতপূর্ণ ও বরকতময় আমল নবীজি (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়া। এই ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত লাভ হয় এবং জীবনে বরকত নেমে আসে। এতে আল্লাহর প্রিয় হাবিব মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও আনুগত্য প্রকাশ পায়। দরুদ পাঠের মাধ্যমে অন্তর হয় প্রশান্ত, মুখ হয় পবিত্র আর আমলের ঝুলি পরিপূর্ণ হয়।

রাসুলুল্লাহ (সা.) মানবজাতির জন্য রহমত। তার মাধ্যমেই আমরা কোরআন, হাদিস ও সঠিক পথের দিশা পেয়েছি। তাই তার প্রতি দরুদ পড়া মুসলমানদের ঈমানি দায়িত্ব। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘অবশ্যই আল্লাহ ও তার ফেরেশতারা নবীর প্রতি সালাত প্রেরণ করেন। হে মুমিনরা, তোমরাও তার প্রতি যথাযথ সালাত ও সালাম পেশ করো।’ (সুরা আহজাব : ৫৬)।

আল্লাহর রহমত লাভের উপায় : একবার দরুদ পাঠ করলে আল্লাহতায়ালা ১০টি রহমত নাজিল করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহতায়ালা তার প্রতি ১০টি রহমত বর্ষণ করেন।’ (তিরমিজি : ৪৮৫)।

দরুদ পাঠে গুনাহ মাফ হয় : আনাস ইবন মালিক (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরুদ পাঠ করবে আল্লাহতায়ালা তার ওপর ১০ বার রহমত নাজিল করবেন, তার ১০টি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে এবং তার জন্য ১০টি মর্যাদা উন্নীত করা হবে।’ (নাসায়ি : ১২৯৭)।

ফেরেশতাদের দোয়া : দরুদ পাঠকারীর জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন। আমির বিন রাবিআহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম আমার প্রতি দরুদ পাঠ করে এবং যতক্ষণ সে আমার প্রতি দরুদ পাঠরত থাকে, ততক্ষণ ফেরেশতারা তার জন্য দোয়া করতে থাকেন। অতএব, বান্দা চাইলে তার পরিমাণ (দরুদ পাঠ) কমাতেও পারে বা বাড়াতেও পারে।’ (ইবনে মাজাহ : ৯০৭)।

দরুদ পাঠ না করায় অভিসম্পাত : যে ব্যক্তি নবী (সা.)-এর নাম শুনে দরুদ পাঠ করল না; তার প্রতি আল্লাহর রাসুল (সা.) অভিসম্পাত করেছেন। (ইবনে হিব্বান : ৯০৭)।

নবীজির (সা.) সুপারিশ : আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এ দরুদ পাঠ করবে তার জন্য আমার সুপারিশ অবধারিত হয়ে যাবে।’ (আলমুজামুল কাবির, তবারানি : ৫/৪৪৮১)।

দোয়া কবুলের মাধ্যম : দোয়া কবুল হওয়ার উত্তম পন্থা হলো প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করা, তারপর মহানবী (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ করা। এরপর কাঙ্ক্ষিত বস্তু আল্লাহর কাছে চাওয়া। ওমর (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ পাঠ না করা হলে সেই দোয়া আসমান ও জমিনের মাঝখানে স্থগিত থাকে। সেই দোয়া আল্লাহর দরবারে পৌঁছায় না।’ (জামে তিরমিজি)।

লেখক : আলেম ও সংগঠক

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত