বগুড়ায় গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে জাতীয় ফল কাঁঠালের মোচা। কাঁঠাল ঋতু বৈচিত্র্যের গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমের ফল হলেও শীতকালে গাছের কাণ্ড ভেদ করে কাঁঠালের এসব মোচা বের হয়। বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল।
মধুমাসের অন্যতম আকর্ষণীয় পুষ্টিকর ফল হচ্ছে কাঁঠাল। ভোজন বিলাসীদের কাঁঠাল খুব প্রিয় একটি ফল। খৈ ও পান্তা ভাতে কাঁঠাল খাওয়া গ্রামবাংলায় প্রাচীন ঐতিহ্য।
মধুমাস জ্যৈষ্ঠ মাসে কাঁঠাল ছাড়া জামাই আদর যেন অপূর্ণ থেকে যায়। বগুড়ায় ১২ উপজেলায় বসতবাড়ি, বাগান, ভিটা, পতিত জায়গায় ও রাস্তার ধারে এসব কাঁঠাল গাছে এবারে প্রচুর মোচা এসেছে। গাছে গাছে নতুন পাতাসহ শোভা পাচ্ছে মোচা। কাহালু সদর ইউনিয়নের বুড়ইল গ্রামের আবুল কাশেম জানান, এবার কাঁঠাল গাছে প্রচুর মোচা এসেছে। একেক গাছে ৬০-৭০টি কাঁঠাল ধরে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কাঁঠালের ভালো ফলন আশা করছি। অনাবৃষ্টি ও মোচায় পচারির কারণে কাঁঠালের মোচা গাছে শুকিয়ে পচে নষ্ট হয়ে যায়। এতে কাঁঠালের ফলন কমে যায়। কাঁচা কাঁঠাল সবজি হিসেবেও রান্না করে খাওয়া যায়। এছাড়া কাঁঠালের বিচিতে প্রচুর ভিটামিন থাকায় এটিকে অনেকে সবজি ও ভর্তা করে খায়। কাঁঠাল গাছের কাঠ দিয়ে ঘরের সৌখিন আসবাবপত্র তৈরি করা হয়। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বিভিন্ন হাট বাজারে প্রচুর পাকা কাঁঠালের আমদানি হয়। বেচা বিক্রিও হয়। প্রতিটি কাঁঠাল দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ টাকা বিক্রি হয়। হাটবাজারে কাঁঠাল কেনার ধুম পড়ে যায়। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কাঁঠাল গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমের সুমিষ্ট, সুস্বাদু, রসালো ও মজাদার একটি জাতীয় ফল। প্রত্যেককের বাড়িতে কাঁঠাল গাছ রয়েছে। মধু মাসে কাঁঠালের চাহিদা বেড়ে গিয়ে এ ফলের কদর বেশি হয়। আমাদের কাছে কাঁঠাল গাছের সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও স্থানীয়ভাবে কাঁঠাল গাছের সঠিক পরিচর্যা করা হলে বাণিজ্যিকভাবে কাঁঠাল গাছ থেকে বছরে আয় করা সম্ভব।
বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের ডা. আসাদুর রহমান জানান, কাঁঠাল একটি রসালো, মজাদার, সুমিষ্ট, পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ফল। এটি শুধু খেতেই মজাদার নয়, কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ ও পটাসিয়াম রয়েছে। যা মানবদেহের আয়রনজনিত ঘাটতি পূরণে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা রাখে। কাঁঠাল শরীরে রোগ প্রতিরোধে শক্তিশালী ভূমিকা রাখে। এটি ভিটামিন এ ও সিসমৃদ্ধ একটি ফল। এবারে গাছে গাছে প্রচুর মোচা এসেছে। এই মোচা থেকে কয়েকমাস পর পরিপূর্ণ একেকটি কাঁঠালে পরিণত হবে।