আগামীকাল শনিবারের জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে। সিভিল সার্জনের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে ক্যাম্পেইনের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
নারায়ণগঞ্জ : এবার নারায়ণগঞ্জে ৬-৫৯ মাস বয়সের ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৮৮ জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিভিল কার্যালয় ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশেনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮২ জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে। ৬-১১ মাস বয়সী ২৪ হাজার ১৬৭ জন ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ১ লাখ ৯ হাজার ৮১৫ জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। নাসিক এলাকায় ৩৪০টি কেন্দ্রে কেন্দ্রে ২ জন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মী শিক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে এ ক্যাম্পেইন কার্যক্রম বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ব্যাতিত জেলার ৫টি উপজেলায় ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৩ লাখ ৪০ হাজার ৫০৬ জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে। ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৪২ হাজার ২৯৪ জন শিশুকে নীল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ২ লাখ ৯৮ হাজার ২১২ শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ৫টি উপজেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র ১ হাজার ৫৬টি, প্রতি কেন্দ্রে মোট ৩ জন (স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মীসহ) শিক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন কার্যক্রম বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেডিকেল অফিসার ডা. নাফিয়া ইসলাম বলেন, যেসব শিশুরা ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন চলাকালিন টিকা খেতে পারবে না তারা পরবর্তী সাত কার্য দিবসের মধ্যে ইপিআই টিকা দান কেন্দ্রে শিশুকে টিকা খাওয়াতে পারবেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মো. মুশিউর রহমান বলেন, ২০১০ সাল থেকে নিয়মিতভাবে বছরে দুইবার ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো অব্যাহত রাখার ফলে বর্তমানে ভিটামিন এ এর অভাবজনিত রাতকানা রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা শূন্য দশমিক শূন্য চার শতাংশে নেমে এসেছে। ক্যাপসুল নিরাপদ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার তেমন কোনো ঝুঁকি নেই।
মুন্সীগঞ্জ : সিভিল সার্জন অফিসের তৃতীয় তলায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আগামী ১৫ মার্চ জেলায় মোট ২ লাখ ৭ হাজার ৪৬২ জন শিশুর মাঝে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খায়ানোর লক্ষ্যামাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সের নীল ক্যাপসুল খায়ানো হবে ২৬হাজার ৮৪৪ জনকে। আর ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সের লাল ক্যাপসুল খায়ানো হবে ১ লাখ ৮০ হাজার ৬১৮ জনকে। জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. মনজুরুল আলম উপস্থিত গণমাধ্যমের কর্মীদের মাঝে বিস্তারিত কর্মসূচি তুলে ধরেন। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা ৬টি স্থানে স্থায়ীয় কেন্দ্র স্থপান করা হয়েছে। আর অস্থায়ীয় কেন্দ্র রয়েছে ১ হাজার ৬০৬টি। ভ্রামমাণ কেন্দ্র থাকবে ২৩টি। এখানে সব মিলিয়ে কেন্দ্র হচ্ছে মোট ১ হাজার ৬৩৫টি। এদিন এ সব কেন্দ্র থেকে টিকার বিষয়ে সেবা প্রদান করবে স্বাস্থ্য কর্মীরা।
চুয়াডাঙ্গা : সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে ও আয়োজনে সাংবাদিক সম্মেলন জানানো হয়, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১ লাখ ৪৭ হাজার ৯৩০ জন শিশুকে ভিটমিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নিউট্রেশন ইন্টারন্যাশনালের জেলা সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ১৫ মার্চ থেকে এ জেলার ৪টি উপজেলায় ও ৪টি পৌরসভায় ১৭ হাজার ৩৬৩ জন ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ও ১ লাখ ৩০ হাজার ৫৬৭ জন ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ৮৯৬টি আউটরীচ ও ১০টি স্থানীয় টিকাদান কেন্দ্রে ১ হাজার ৮১২ জন স্বেচ্ছাসেবক, ২৭১ জন সরকারি ও বেসরকারী কর্মী এবং ১১৮ জন প্রথম সারির তত্ত্বাবধায়ক এ কাজে নিয়াজিত থাকবেন। জাতীয় পুষ্টি সেবা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এ কাজ বাস্তবায়ন করছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়াউদ্দিন আহমেদ, মেডিকেল অফিসার ডা. সাজিদ হাসান, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি রাজীব হাসান কচি ও সাধারণ সম্পাদক বিপুল আশরাফ ও জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মানিক আকবার প্রমুখ।
শরীয়তপুর : সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সিভিল সার্জন ডা. রেহান উদ্দিনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. জাহিদুল ইসলাম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাপর প্রতিনিধি ডা. সাব্বির রহমান ও ইপিআই সুপার মোজাম্মেল হক। এতে জানানো হয়, ক্যাম্পেনের মাধ্যমে জেলার ১ হাজার ৬৬৬টি কেন্দ্রের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর্মী, পরিবার পরিকল্পনাকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকসহ মোট ৩ হাজার ৮৭২ জন কর্মী ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৫৪ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াবেন। এর মধ্যে ৬-১১ মাস বয়সের ২১ হাজার ১৫০ শিশুকে নীল রঙের ও ১২-৫৯ মাস বয়সের ১ লাখ ৪৯ হাজার ৭০৪ শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
রাজবাড়ী : জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের আওতায় ৬ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী প্রায় ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৩০ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে রাজবাড়ীতে। জেলার ৫টি উপজেলা ও ৩টি পৌরসভার ১ হাজার ৬৬টি টিকা কেন্দ্রে এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। আগামী ১৫ মার্চ জেলা ৫ উপজেলা, ৩ পৌরসভা ও ৪২ ইউনিয়নে ১ হাজার ৬৬ টি টিকা কেন্দ্রে এই ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে বলে জানিয়েছেন রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. এসএম মাসুদ। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের হলরুমে জেলা পর্যায়ে সাংবাদিকদের কর্মশালায় এ তথ্য জানান তিনি।
শেরপুর : সিভিল সার্জন কার্যালয় সম্মেলন কক্ষে জেলা সিভিল সার্জনের আয়োজনে শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ শাহীনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন- শেরপুর প্রেসক্লাব একাংশের সভাপতি এসএম শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আদিল মাহমুদ উজ্জল, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল হাশিম। বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন সিভিল সার্জন অফিসের ডিসিজ কন্টোল ডা. মো. আহসানুল হাবিব হিমেল। সিভিল সার্জন বলেন, শেরপুর পাঁচটি উপজেলায় মোট ৫২ টি ইউনিয়নে ১২১ জন সুপারভাইজারের মাধ্যমে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে। ১৩৪৯টি কেন্দ্রের মাধ্যমে এ ক্যাম্পেইন সম্পন্ন করা হবে বলে তিন জানান। ৬-১১ মাস বয়সী ২৭ হাজার ৩৩৪ শিশুকে ১টি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ২ লাখ ১২ হাজার ৪৯৩ শিশুকে ১টি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোবারক হোসেন, জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা শেরপুর জেলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক জিএইচ হান্নান, শেরপুর প্রেসক্লাব একাংশের সাংগঠনিক সম্পাদক বুলবুল আহম্মেদ, আলোকিত বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি ছামিউল আলম সোহান, সাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলাম, সাংবাদিক আবু হানিফ নোমান, হারুনুর রশীদ হারুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সভাকক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন- ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আবুল বাসার মো. সায়েদুজ্জামান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ম্যাডিকেল অফিসার ডা. ইফতেখায়রুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমান মিঠু, জেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর আশিষ কুমার সাহা প্রমুখ। কর্মশালায় জানানো হয়, জেলায় মোট ২ লাখ ৩৬ হাজার ১০০ জন শিশুকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে ৬-১১ মাস বয়সী ২৬ হাজার ৬০০ জন ও ১২-৫৯ মাস বয়সী শিশু ২ লাখ ৯ হাজার ৫০০ জন।