চাঁদপুরে একই বাগানে বিশ্বখ্যাত নামিদামি ৫৭ জাতের আম চাষ করা হয়েছে। আমগুলো পাকতে শুরু করেছে।
এ দেশের মাটিতে বিশ্বখ্যাত ৫৭ জাতের আম চাষ করে সাড়া ফেলেছেন উদ্যোক্তা মিডিয়া ব্যক্তিত্ব হেলাল উদ্দিন। চাঁদপুর সদর উপজেলার ৪নং শাহ মাহমুদপুর ইউনিয়নের শাহতলী বাজার এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে। সে নদীর পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে ফ্রুটস ভ্যালি অ্যাগ্রো ম্যানগ্রো নামের একটি খামার। এ সময়ের পরিত্যক্ত ইটভাটায় কেমিক্যাল ও বিষমুক্ত বিদেশি নানা ফল আর সবজি চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন হেলাল উদ্দিন। ফ্রুটস ভ্যালি ঘুরে দেখা যায়, পুরো বাগানজুড়ে আড়াই শতাধিক আম গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছের ডালে রংবেরঙের আম ঝুলছে। এমন দৃশ্য দেখে যে কেউ মুগ্ধ হবেন। যদিও আমের রং দেখে বোঝার উপায় নেই আমগুলো এখনও অপরিপক্ব। তবে আর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই আমগুলো পাকা শুরু করবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তা হেলাল উদ্দিন। তার এই বিদেশি ৫৭ জাতের আমের বাগান দেখতে দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা প্রতিদিনই ভিড় করছে দৃশ্যমান বিদেশি আম দেখতে।
উদ্যোক্তা হেলাল উদ্দিনের বাগানে রয়েছে বিশ্বখ্যাত আম ভ্যালেন্সিয়া প্রাইড, লেমনজেস্ট, রোসারোসা, আতাউল্ফ, কারাবাও, আলফানসো, মায়া, হাডেন, সেনসেশন, আর-টু ই-টু, ক্যাংসিংটন প্রাইড, মিয়াজাকি, ব্যাকস্টোন, জাম্বো রেড চাকাপাত, নামডকমাই, এসআর ম্যাংগো, ফ্রাংসিস, ব্রুনাই কিং, কেষার, মল্লিকা, তোতাপুরি, হানিডিউসহ বিভিন্ন জাতের আম আছে।
এছাড়া বাগানটিতে বিদেশি আমের পাশাপাশি ১৭ জাতের সাইট্রাস, কমলা, ম্যান্ডারিন, মাল্টা, লেমন, ২১ ধরনের আঙুর, ১২ প্রজাতির লংগান, ৪ প্রজাতির রাম্বুটান, ৭ ধরনের ড্রাগন ফল, ৪ জাতের লিচু ও ৭ প্রজাতির অ্যাভোকাডো, ৬ জাতের আতা, ৫ জাতের আপেল, ম্যাংগোস্টিন, অ্যাপ্রিকট, করোসল, মাম্মি সাপুটেসহ আরও বেশ কিছু দেশি-বিদেশি ফলগাছ রয়েছে। উদ্যোক্তা এএমএম হেলাল উদ্দিন বলেন, সারা বিশ্ব থেকে উচ্চ মূল্যের ও উচ্চ মানের ফল জমিতে চাষ করা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, পরিত্যক্ত একটি ইট ভাটার মধ্যে এসব বিদেশি ফলের চাষ করে এক চমক সৃষ্টি করেন হেলালউদ্দিন। বিশ্বের সবচেয়ে দামি আমের মধ্যে ২০ ধরনের আমই এই বাগানে স্থান পেয়েছে।
সব মিলিয়ে এ বছর ৫৭ জাতের আম চাষ করা হয় এ বাগানে। বিশ্বের সব দামি আমগুলো নিয়েই আমরা কাজ শুরু করেছি।
তিনি আরও বলেন, গত বছর এই বাগান থেকে ৬ লাখ টাকা আয় হয়েছে। এই বছর আশা করছি, দুই শতাধিক গাছ থেকে ৭ লাখ টাকারও বেশি আয় করতে পারব। আমি মনে করি কৃষি উদ্যোক্তা ও বেকার যুবকরা এই জাতের আম চাষ করতে পারলে সুফল পাওয়ার শতভাগ সম্ভাবনা রয়েছে।
আম বাগানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, পরিত্যক্ত ইটভাটার মাটিতে আম চাষ করা যায়, সেটা এখানে এসে দেখেই মুগ্ধ হলাম। সাধারণ মাটিতে বিদেশি আমের চাষ করে সফলতা পাওয়া সত্যিই অন্যরকম আনন্দ উপভোগ করার মতো। তিনি যেভাবে গড়ে তুলেছেন আমরা হয়তো এভাবে পারব না।
চাঁদপুর ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারি, ডাকাতিয়ার পাড়ে একটি আমের বাগান গড়ে উঠেছে। তার জন্য আমি নিজেই দেখতে চলে আসি। আসলেই মনোমুগ্ধকর পরিবেশে বাগানটি গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে আমগুলো প্রাকৃতিকভাবে বড় হয়েছে এবং ভেজালমুক্ত। আমি আশা করি, হেলাল উদ্দিনের দেখাদেখি আরও বেকার যুবক ও এমন উদ্যোগ গ্রহণ করলে নিজেরা লাভবান হবেন। বিশেষ করে বাগানের ফ্রেস আমগুলো ভোক্তা সাধারণ এখানে এসে কিনতে পারবেন। এটাই সত্যিকার অর্থে আরও আনন্দদায়ক।