ঢাকা বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

নওগাঁয় ডিজিটাল এমব্রয়ডারি মেশিনে নকশা সাড়া ফেলেছে

নওগাঁয় ডিজিটাল এমব্রয়ডারি মেশিনে নকশা সাড়া ফেলেছে

কম্পিউটারাইজ ডিজিটাল এমব্রয়ডারি মেশিন দিয়ে নকশা করা হচ্ছে পাঞ্জাবি ও থ্রি-পিছে। একইসঙ্গে কোর্ট ও ব্লেজারসহ বিভিন্ন ব্যান্ডের লেগো তৈরি হচ্ছে। হাতের কাছে এমন কাজ পেয়ে খুশি নওগাঁর গার্মেন্ট কাপড়, পাঞ্জাবি ও টেইলার্স ব্যবসায়িরা। এতে সময় ও অর্থ দুটো সাশ্রয় হচ্ছে। জেলার জন্য ডিজিটাল এমব্রয়ডারি ডিজাইন সম্ভবনাময় বলে জানান এ প্রতিষ্ঠানের মালিক ইবনুল হাইসাম মিশু।

কম্পিউটারাইজ ডিজিটাল এমব্রয়ডারি মেশিন উৎপাদনের প্রতিটি ধাপকে আরও দ্রুত, দক্ষ এবং মানসম্পন্ন করে তোলে, যা উৎপাদনের গুণগত মান বজায় রাখতে সহায়তা করে। এতে ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় যোগ হচ্ছে নতুনত্ব। শহরের টিনপট্টি মহল্লার যুবক ইবনুল হাইসাম মিশু। দীর্ঘদিন ঢাকায় একটি কম্পিউটারাইজ ডিজিটাল এমব্রয়ডারি কারখানায় কাজ শিখেন। গত ৪ বছর আগে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকায় একটি কম্পিউটারাইজ ডিজিটাল এমব্রয়ডারি মেশিন কিনে নিজ জেলায় চলে আসেন। এরপর জেলা শহরের দপ্তরী পাড়া মোড়ে মেশিনটি স্থাপন করেন। কারখানার নাম দেন আইএইচ কম্পিউটারাইজ এমব্রয়ডারি। এটি জেলার প্রথম ও একমাত্র ডিজিটাল এমব্রয়ডারি কারখানা। এ কারণে অল্প দিনেই বেশ সাড়া পরে জেলার গার্মেন্ট কাপড়, পাঞ্জাবি ও টেইলার্স ব্যবসায়িদের মাঝে। হাতের কাছে এমন কারখানা হওয়ায় কোন হয়রানি আর ঝামেলা ছাড়া পছন্দের ডিজাইন পেয়ে খুশি স্থানীয় ব্যবসায়িরা। কাজের মান ও ফিনিশিং ভালো হওয়ায় বিভিন্ন জেলার অর্ডার আসে এই কারখানায়। আর এখানে তৈরি নকশা চলে যায় বিভিন্ন জেলায়।

এক সময় পাঞ্জাবি, ফতুয়া ও থ্রি-পিছে নকশা এবং কোর্ট ও ব্লেজারসহ বিভিন্ন ব্যান্ডের লেগো তৈরির জন্য ঢাকা থেকে কাজ করে নিতে হতো ব্যবসায়িদের। এতে সময় ও শ্রম বেশি দিতে হতো। একইসঙ্গে অর্থও বেশি খরচ হতো। ক্রেতাদের কাছে সময়মতো পোশাক হস্তান্তর করা সম্ভব হতো না। তবে হাতের কাছে কম্পিউটারাইজ ডিজিটাল এমব্রয়ডারি হওয়ায় গার্মেন্ট কাপড়, পাঞ্জাবি ও টেইলার্স ব্যবসায়িদের কাজ আরও সহজ হয়েছে। এতে সময়, শ্রম ও অর্থ সাশ্রয় হয়েছে। বর্তমানের হাতের কাছে এমন কাজ পেয়ে খুশি ব্যবসায়িরা।

উদ্যোক্তা ইবনুল হাইসাম মিশু বলেন- পাঞ্জাবি, থ্রি-পিছের পাশাপাশি শাড়ি, শার্টের পকেট- কলারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লেগো এমব্রয়ডারি করা হয়। থ্রি-পিছ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া ও শাড়িতে নকশার মজুরি নেওয়া হয় ২০০-২৫০ টাকা এবং বিভিন্ন ব্যান্ডের লোগো ১৫-২০ টাকা। শ্রমিক ও বিদ্যুৎবিলসহ আনুষঙ্গিক সব খরচ বাদ দিয়ে ভালো লাভ থাকে বলে জানান তিনি। তবে জেলার জন্য ডিজিটাল এমব্রয়ডারি সম্ভবনাময় বলে মনে করেন তিনি। শহরের রুবেল টেইলার্সের স্বত্ত্বাধিকারী রুবেল হোসেন বলেন, কোর্ট ও ব্লেজারে যেসব লোগো বা এমব্রয়ডারি করে লিখে নাম ব্যবহার করা মফস্বল শহরে সেটা তৈরি করা সম্ভব হয়না। এসব লোগো আমাদের ঢাকা থেকে অর্ডার দিয়ে তৈরি করে নিয়ে আসতে হয়। এতে সময় সাপেক্ষ এবং খরচও বেশি পড়ে। তবে এখন এই শহরে কম্পিউটারাইজ ডিজিটাল এমব্রয়ডারি মেশিন দিয়ে বিভিন্ন লোগো থ্রি-পিছ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া ও শাড়িতে নকশা তৈরি হচ্ছে এবং পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে টেইলার্স ব্যবসায়িদের জন্য সুবিধা হয়েছে। পাশাপাশি যারা নারী উদ্যোক্তা রয়েছে তাদের জন্য আরও সুবিধা হয়েছে। তারা সহজেই শাড়ি ও থ্রি-পিছে তাদের পছন্দ মতো নকশা তৈরি ব্যবসায় আরও সফলতা নিয়ে আসতে পারছে। এই মেশিনটি নওগাঁবাসীসহ আশপাশের জেলাগুলোতে উৎপাদনের ধাপকে আরও এগিয়ে নিতে সাহায্য করছে।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) নওগাঁর উপ-ব্যবস্থাপক শামীম আক্তার মামুন বলেন, সুঁই ও সুতা দিয়ে হাতের সাহায্যে অনেক সময় ধরে নকশা করতে হতো। বর্তমানে কম্পিউটারাইজ ডিজিটাল এমব্রয়ডারি মেশিন আসায় কাজ অনেক সহজ হয়েছে। এতে পোশাকের ডিজাইনে নতুনত্ব আসার পাশাপাশি অনেক উদ্যোক্তা তৈরি হবে এবং কর্মসংস্থান বাড়বে। এ বিষয়ে যদি আরও কেউ উদ্যোক্তা হতে চাই আমরা প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত