ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ব্যস্ত সময় পার করছেন কুষ্টিয়ার কামাররা

ব্যস্ত সময় পার করছেন কুষ্টিয়ার কামাররা

আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে টুং টাং শব্দে ব্যস্ত সময় পার করছেন কুষ্টিয়ার রাজারহাটের কামাররা। চলছে হাপর টানা, পুড়ছে কয়লা, জ্বলছে লোহা। হাতুড়ি পিটিয়ে কামার তৈরি করছেন দা, বটি, ছুরিসহ মাংস কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম। কামাররা নতুন অস্ত্র-পাতি তৈরির সঙ্গে পুরোনো দা-বঁটি, ছুরি ও চাপাতিতে সান দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যেন খাওয়ারও সময় নেই কামারদের। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় তাদের কাজ বেড়েছে। দিনরাত পরিগুম করছেন তারা। তাদের এ ব্যহমশতা চলবে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত।

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটার সরঞ্জাম। এ চাহিদা পূরণে ব্যস্ততা বেড়েছে কুষ্টিয়ার রাজারহাটের কামারদের। এখানে ১০ ঘর কামারশালা তৈরির কারখানা রয়েছে। কারিগরসহ ২৫-২৬ জন কাজ করে। বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। রাজারহাটের স্বন্দীপ কর্মকার জানান, কয়লা ও লোহার দাম অনেক বেশি। তাই তৈরি করা সরঞ্জাম বিক্রি বেশি হলেও লাভ কম হয়। আর মাত্র কদিন পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। তাই এ উৎসবকে কেন্দ্র করে কামারদের ব্যস্ততা বেড়েছে অনেক। কাজের চাপে যেন খাওয়ার সময় নেই তাদের। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছেন কামাররা।

বাবলু কর্মকার জানান, সারা বছরের মধ্যে কোরবানি ঈদেই আমাদের বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়। বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম বেশি। তাই তৈরি করা সরঞ্জাম বিক্রি বেশি হলেও লাভ কম হয়। আমরা বছরজুড়ে এ সময়ের অপেক্ষায় থাকি। সারা বছর আমাদের তেমন বিক্রি হয় না। তবে কোরবানি ঈদের আগে আমাদের বিক্রি বেড়ে যায়। তিনি আরও বলেন, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ২০০ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি ৬০ টাকা ইঞ্চি। তাতে একটি ৬০০ টাকা পাইকারি। এছাড়া ডাসা ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কেজি ওপরের নির্ভর করে দাম নির্ধারণ করা হয়। কারিগররা অভিযোগ করে জানান, তাদের পরিশ্রমের তুলনায় মজুরি অনেক কম। সারা দিন আগুনের পাশে বসে থেকে কাজ করতে হয়, এর ফলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি হয়।

পরিশ্রম বেশি আর লাভ কম হওয়ায় কমে যাচ্ছে কামার সম্প্রদায়ের মানুষ। বাধ্য হয়ে পৈত্রিক পেশা পরিবর্তন করছেন অনেকে।

জয়দেব কর্মকার বলেন, গত বছরের থেকে এ বছর কাজ কম। কামার শিল্পের অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি হচ্ছে কয়লা। কিন্তু এ কয়লা এখন প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে কয়লা সংগ্রহ করতে হয়। বর্তমানে কয়লার দামও অনেক বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লোহার দামও। লোহা ও কয়লার দাম বাড়লেও সেই তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত