পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠী ইউনিয়নে পাংগাশিয়া খালের উপর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ ও স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের পারাপারে চরম দুর্ভোগে পড়েছে। উপজেলার শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের ফলইবুনিয়া গ্রামে কাছারি বাড়ির খালের মোহনায় পাংগাশিয়া খালের উপর তিন যুগ পূর্বে নির্মিত বাঁশ ও সুপারি গাছের ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো ভেঙে পরে মাঝের অংশ পানিতে ভেসে গেছে। এই সাঁকোটি দীর্ঘ কয়েক যুগ পূর্বে অতি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের পথ হিসেবে বিবেচনা করে নির্মাণ করেছিলেন তৎকালীন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। কিন্তু দীর্ঘ বছর ধরে সঠিকভাবে সংস্কারের না-হওয়ায় দীর্ঘদিন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। যাহা সম্প্রীতি নিম্নচাপ শক্তির প্রভাবে অতিরিক্ত পানির চাপে সাঁকোটির মাঝের অংশ ভেঙে পানিতে ভেসে যায়। বিকল্প পথ না থাকায় মানুষ পারাপারে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় প্রতিনিয়ত। কাউখালীর-বেকুটিয়া নতুন বাজার হইতে ফলইবুনিয়া, জোলাগাতী, তালুকদার হাট, হাওলাদার হাটসহ জোলাগাতী ফাজিল মাদ্রাসা, জোলাগাতি, হাই স্কুল, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে খালের দক্ষিণ পারে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোর অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই সাঁকো না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে। এই এলাকার অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীদের সাঁকো না থাকায় দুই থেকে তিন কিলোমিটার ঘুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার জন্য যেতে হয়। এছাড়া দক্ষিণ পাড়ে শিশুদের জন্য রয়েছে নূরানী মাদ্রাসা, হেফজখানা ও ছাত্রাবাস। খালের দক্ষিণ পাড়ের লোকজনকে কলেজ উপজেলা ও জেলা সদরে যেতে হলে এই সাঁকোটি তাদের একমাত্র ভরসা। কারণ বেকুটিয়া সেতু পশ্চিম পাড়ে পিরোজপুর জেলা শহর এবং পূর্ব পাড়ে কাউখালী উপজেলা পরিষদ কাউখালী থানা, কলেজ, হাসপাতাল অবস্থিত। অথচ এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বাঁশের সাঁকো অপসারণ করে ব্রিজের দাবিতে মানববন্ধন স্থানীয় এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন করলেও কোনো লাভ হয় নাই। গুরুত্বপূর্ণ এই সাঁকোটি কয়েক যুগ আগে নির্মিত হলেও সংস্কারের অভাবে জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে।
স্থানীয় ফলইবুনিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য মেহেদী হাসান রুবেল বলেন, পাংগাশিয়া খাল পারাপারের জন্য এই স্থান থেকে খালের পশ্চিম দিকে তিন কিলোমিটার দূরে পাংগাশিয়া বাজারের ব্রিজ এবং পূর্বদিকে দুই কিলোমিটার দূরে বেলতলা ব্রিজ ছাড়া পারাপারের জন্য বিকল্প কোনো ব্রিজ না থাকায় এই সাকোই ছিল মানুষের শেষ ভরসা। যে কারণে স্থানীয়দের জরুরি প্রয়োজনে নিজেরা গ্রাম থেকে বাস, সুপারি গাছ সংগ্রহ করে ও স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে দীর্ঘ বছর সাঁকোটি বাঁচিয়ে রেখেছিল। স্থানীয় মাদ্রাসা ও মসজিদ এর পরিচালক মানিক হুজুর বলেন আমরা সাবেক এমপি আনোয়ার হোসেন মহোদয়ের কাছে বারবার আবেদন করলে তিনি ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছিলেন ১০ বছর আগে কিন্তু তার আশ্বাস আজও আলোর মুখ দেখেনি। আমরা ছাত্র-ছাত্রী ও মুসল্লীদের পারাপারের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। এখানে প্রতিদিন নৌকা বা অন্য কোনো মাধ্যমে পারাপার হতে গিয়ে দুর্ঘটনা শিকার হন। কাউখালী উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার মো. ইমতিয়াজ হোসেন জানান, নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য কোনো পরিকল্পনা ইঞ্জিনিয়ার অফিসের জানা নাই। তবে নতুন ব্রিজ নির্মাণ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা বলেন, সাধারণ মানুষের চলাচলের জন্য সাঁকোটি মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।