গত শুক্রবার উত্তরাঞ্চলের মানুষের বহুযুগের প্রতীক্ষিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বগুড়া আঞ্চলিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম আমানুল্লাহ। আঞ্চলিক কেন্দ্র উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বগুড়া টিটু মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, শুধুমাত্র নামের কারণে বিশেষ এই জেলাকে দীর্ঘসময় সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আর এ জন্যই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বগুড়াকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা এই আঞ্চলিক কেন্দ্র উদ্বোধন করছি। উপাচার্য আরো বলেন, বগুড়া আঞ্চলিক কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে এই অঞ্চলের প্রায় তিন শতাধিক কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে কাউকে আর রাজশাহী কিংবা ঢাকায় যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। তিনি আরো বলেন, কলেজগুলোতে গভর্নিং বডির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হলে সেই কমিটি সঙ্গে সঙ্গে বাতিল করা হবে এবং বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ারও হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন। আগামীতে কলেজগুলোতে গভর্নিং বডি রাখা হবে কি না সেটাও এখন ভাবা হচ্ছে। মব জাস্টিসের মাধ্যমে অধ্যক্ষ এবং শিক্ষকদেরকে অসম্মান করে চেয়ার থেকে টেনে নামানোর সংস্কৃতি আর চলতে দেয়া হবে না এবং সেই সঙ্গে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করেন উপাচার্য। অধ্যাপক আমানুল্লাহ বলেন, আশেপাশের দেশগুলো বাংলাদেশের কাছাকাছি সময়ে স্বাধীনতা লাভ করে শিক্ষা শিল্প এবং সমৃদ্ধিতে এগিয়ে গিয়েছে যেখানে আমরা অনেক পিছিয়ে। গত পনেরো বৎসরে উচ্চশিক্ষার সিলেবাসকে আন্তজার্তিক মানদন্ডে দাঁড় করানোর কোনো উদ্যোগকে স্বাগত জানায়নি বিগত সরকার। এ সব কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমরা সিলেবাস এবং শিক্ষার্থীদের আন্তজার্তিকভাবে মানসম্মত করে গড়ে তুলতে সব ধরনের সংস্কারে হাত দিয়েছি। সিলেবাস সংস্কারের মাধ্যমে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের স্বাক্ষী হতে যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, যার ফলে বিশ্ববাজারে শিক্ষার্থীদের বাজার মূল্য বেড়ে যাবে। উপাচার্য আরও উল্লেখ করেন, কলেজে মনিটরিং, অডিট এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সব রকমের ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই নেয়া হয়েছে যা কলেজগুলোর মান উন্নয়নে সাহায্য করবে।
এ বছর থেকে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তার শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিতে যাচ্ছে। আরো মানসম্মতভাবে প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে, সমস্ত আর্থিক লেনদেন ব্যাংকের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। সর্বোপরি শিক্ষক, পরিচালনা পর্ষদ ও শিক্ষার্থীদের লেজুড়বৃত্তিক দলীয় রাজনীতির প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে। মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে এবং বিশেষ করে ব্যবহারিক মূল্যায়ন পদ্ধতি ঢেলে সাজাতে হবে বলেও জানান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম আমানুল্লাহ।