ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

রামুর বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ, বর্ষায় লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

রামুর বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ, বর্ষায় লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

কক্সবাজারের রামু উপজেলার বাঁকখালী নদীতীরবর্তী এলাকার অধিকাংশ বেড়িবাঁধ মেরামতের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এতে বর্ষা মৌসুমে লোকালয়ে পানি ঢোকার পাশাপশি বাড়িঘর নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ফলে নদীতীরে বসবাসরত বিভিন্ন ইউনিয়নের হাজারো পরিবার আতঙ্কে রয়েছেন।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের শিকলঘাট-পূর্বরাজারকুল এলাকায় বাঁকখালী নদীর তীরঘেঁষে অবস্থিত বেড়িবাঁধটি দীর্ঘ এক বছর ধরে জরাজীর্ণ পড়ে রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কোনোমতে টিকে থাকা এই গুরুত্বপূর্ণ বাঁধটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে আসন্ন বর্ষা মৌসুম স্থানীয়দের মধ্যে বেড়েছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা।

এলাকাবাসী জানান, বৃষ্টি নামলে নদীর পানি ঢুকে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও ফসলসহ সম্পদ হানি ঘটবে।

গত বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবল চাপে রাজারকুল ইউনিয়নের বাঁকখালী নদীঘেঁষা বেড়িবাঁধে দেখা দেয় ভয়াবহ ভাঙন। এ বছরও সেই স্মৃতি তাড়া করছে স্থানীয়দের। এবার যদি সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে রাজারকুল, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ও আশপাশের ইউনিয়নগুলোর হাজার হাজার মানুষ বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিষয়টি জানানো হলেও তারা কেবল আশ্বাস দিয়ে ক্ষান্ত থেকেছে। বাস্তব কোনো উদ্যোগ আজও চোখে পড়েনি। শিকলঘাট এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলম বলেন, আমাদের বসতভিটা নদীর পাড়ে। প্রতি মুহূর্তে আতঙ্কে থাকতে হয়- কখন যে পানি এসে ঘর ভেঙে দেবে, বলা যায় না।

স্থানীয় স্কুলশিক্ষক মোহাম্মদ ইউনূস বলেন, বর্ষায় শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া-আসা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শিকলবাহা সড়ক দিয়ে কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ চলাচল করে। সড়কটি ভেঙে গেলে পুরো এলাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।

রাজারকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান বলেন, গত বছরের ভাঙনের সময় আমরা স্থানীয় যুবকদের নিয়ে অস্থায়ীভাবে বাঁধ তৈরি করে রক্ষা করেছিলাম। কিন্তু এটা কখনওই স্থায়ী সমাধান নয়। আমরা একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি, কিন্তু আজও কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। বর্ষা আসছে, সময় খুবই সীমিত। এখনই ব্যবস্থা না নিলে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। আমি প্রশাসন ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি- অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের উপ-সহকারী প্রকৌশলী খন্দকার আলী রেজা বলেন, আমি ভাঙনের স্থান পরিদর্শন করেছি। ইতোমধ্যে বাঁধ সংস্কার ও ভাঙন রোধে একটি প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বাজেট পেলে কাজ শুরু হবে। অপরদিকে উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের চরপাড়া,কাউয়ারখোপ পুর্বপাড়া,দক্ষিন মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চরপাড়া,খোন্দকার পাড়া, জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের গর্জনিয়াপাড়া,ইলিশিয়াপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে হুমকির মুখে রয়েছে কয়েকশ পরিবার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত