চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌরসভায় নেই নির্দিষ্ট কোনো ডাম্পিং স্টেশন। ফলে প্রতিদিন পৌর এলাকার অন্তত ৫০ থেকে ৬০ টন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে খোলা জায়গায়, সড়কের পাশে ও জলাশয়ের পাড়ে। এতে মারাত্মক পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন পৌরবাসী। হাজীগঞ্জ পৌর এলাকা ও আশপাশের হাটবাজার থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে পৌর কর্তৃপক্ষ। এর সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের ফেলা অতিরিক্ত বর্জ্য মিলিয়ে দৈনিক মোট পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৬০ টন। তবে দীর্ঘদিন ধরে এ বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নেই নির্দিষ্ট কোনো স্থান বা জমি।
ফলে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের মিঠানিয়া ব্রিজ এলাকা, হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ সড়কের ডাকাতিয়া ব্রিজের পাশ, হাজীগঞ্জ-কচুয়া সড়কের রেলগেট এলাকা এবং হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের উত্তর পাশসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে।
পৌরসভার পশ্চিম বাজার এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহিম ও নাছির গাজী অভিযোগ করে বলেন, পৌরসভার বর্জ্য খোলা জায়গায় ফেলার কারণে আশপাশে দুর্গন্ধ, ধোঁয়া ও মশার উপদ্রব বেড়েছে। বর্জ্য ধ্বংসের জন্য জ্বালানো আগুনের ধোঁয়ার কারণে শিশু-বৃদ্ধরা অসুস্থ হচ্ছে, বাতাসে টিকে থাকা দায় হয়ে উঠেছে। অনেকেই শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছেন।
কিন্তু সমস্যা সমাধানে কোনো কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয় সিএনজি চালক নরুল ইসলাম বলেন, হাজীগঞ্জ-কচুয়া সড়কে যাওয়ার সময় ময়লার গন্ধে চালক-যাত্রী সকলের দম বন্ধ হয়ে আসে। বিশেষ করে এসব ময়লায় আগুন লাগালে কয়েকঘণ্টা বাতাসের সাথে ধোঁয়া উড়তে থাকে।
হাজীগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন) মাহবুবুর রশীদ বলেন, পৌরসভার নিজস্ব কোনো জমি নেই, তাই ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। সাবেক পৌর মেয়ররা যেসব জায়গায় বর্জ্য ফেলেছেন, আমরাও সেখানে ফেলে যাচ্ছি।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. ইবনে আল জায়েদ হোসেন বলেন, বিকল্প জায়গার খোঁজ চলছে। ময়লার স্তূপ অপসারণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য পৌরবাসীর সচেতনতা ও সহায়তা প্রয়োজন। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হাজীগঞ্জ পৌরসভা ২০০৪ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। পৌরসভার আয়তন ২০.২৪ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় সোয়া এক লাখ।