জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ৩নং মাহমুদপুর ইউনিয়নের খাশিমারা ও রোকনাইপাড়া গ্রামের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত যমুনা নদীর শাখা উর্মা নদী। মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলার মানুষের যাতায়াত ও পরিবহন সুবিধার জন্য উর্মা নদীর উপর নির্মিত হয় ব্রিজটি। নির্মাণের কয়েক বছর পরেই প্রথমে ব্রিজের পশ্চিমপাশের গোড়া থেকে মাটি সরে রাস্তা থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে চলাচলের বিঘ্ন ঘটে। এর পর থেকেই নানা সময়ে ব্রিজের একেক অংশ ভেঙে পড়ে। ২০১৯ সালের ভয়াবহ বন্যার কারণে ব্রিজের আরও এক-তৃতীয়াংশ ভেঙে পড়ে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানে ব্রিজের দুটি পিলার দণ্ডায়মান আর পূর্ব পাশের একাংশ রয়েছে।
সরেজমিন জানা যায়, মেলান্দহ উপজেলার ৩নং মাহমুদপুর ইউনিয়নের নলছিয়া, খাশিমারা, বানাবান্দা, আদবাড়িয়া, কাজাইকাটা এবং মাদারগঞ্জ উপজেলার ২নং কড়ইচূড়া ইউনিয়নের পূর্ব নলছিয়া, বিনোদটঙ্গী, ঝাড়কাটা, মোমেনাবাদ ও লালডুবা মহিষ বাথান এলাকাসহ অন্যান্য এলাকার প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার লোকের খাশিমারা-রুকনাইপাড়া ভায়া মেলান্দহ ও জামালপুর জেলাসদরে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা এটি। রাস্তার মাঝে ব্রিজের বেহাল দশার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ দুই উপজেলার মানুষ। খাশমিারা ও রুককনাইপড়া গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন ব্রিজ ভাঙার জন্য আমাদের ছেলেমেয়েরা বর্ষাকালে স্কুল-কলেজে যেতে পারে না, কোনো মুমূর্ষু রোগীকে সময়মতো হাসপাতালে নিতে পারি না। আমাদের এলাকায় উৎপাদিত কোন কৃষিজ পণ্য আনা নেওয়া করা যায় না। কোনো ফড়িয়া বা বেপারীরা আসতে চায় না। যার কারণে কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাই না। খাশিমারা গ্রামের বাসিন্দা আলতাফুর জানান, ব্রিজের গোড়া থেকে মাটি সরে সড়কের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে চলাচলের জন্য ব্রিজের গোড়া থেকে মূল সড়ক পর্যন্ত প্রায় ৩০ ফুট দীর্ঘ একটা বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে চলাচল করি। ব্রিজটি সমূলে অর্ধেকের বেশি ভেঙে পড়ায় এখন তাও সম্ভব হচ্ছে না।
পশ্চিম জামালপুরের কৃষিপ্রধান অঞ্চল উল্লেখিত এলাকাগুলো, ব্রিজ ভাঙা ও সংযোগ সড়ক না থাকায় এই অঞ্চলে উৎপাদিত কৃষি পণ্য হাটে বাজারে নিতে না পারার কারণে কৃষক তার কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। বর্তমানে খাশিমারা ও রোকনাইপাড়া দুই গ্রামের মধ্যবর্তী উর্মা নদীতে ব্রিজ পুনর্নির্মাণ তাদের প্রাণের দাবি হয়ে উঠেছে। উপজেলা প্রকৌশলী শুভাশিষ রায় বলেন, উর্মা নদীর ওপর ব্রিজ পুনর্নির্মাণের পূর্ব প্রস্তুতির জন্য একাধিক বার মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি ব্রিজের নামসহ উর্মা ব্রিজের তালিকা নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।