ঈদের আনন্দে যখন চারদিকে খুশির জোয়ার, তখন ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার অলহরী খারহর গ্রামের মোর্শেদুর রহমান কামালের বাড়িতে নেমে এসেছে নিদারুণ বিষাদ। কে বা কারা ঈদের আগের রাতে তার দুই পুকুরে বিষপ্রয়োগ করে প্রায় আট হাজার পাঙ্গাস ও কয়েক হাজার দেশীয় প্রজাতির মাছ মেরে ফেলেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ১০ লাখ টাকা।
দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে পোশাক কারখানায় কাজ করছেন কামাল হোসেন। নিজের রোজগারের কষ্টার্জিত প্রায় আট লাখ টাকা বিনিয়োগ করে পুকুর দুটিতে মাছ চাষ করেছিলেন তিনি। লক্ষ্য ছিল ঈদের পরে মাছ বিক্রি করে সংসারে খানিক সচ্ছলতা আনা। প্রতিটি মাছ তখন গড়ে এক কেজি ওজনে পৌঁছেছিল। সবকিছুই প্রস্তুত ছিল বিক্রির জন্য।
গত শুক্রবার রাতে এক নির্মম শত্রুতার শিকার হয়ে এক নিমিষেই সব কিছু ধ্বংস হয়ে যায়। পুকুরের পানিতে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা বিষপ্রয়োগ করে সমস্ত মাছ নিধন করে। চোখের সামনে ভেসে ওঠে মৃত মাছের স্তূপ। ঈদের দিন ভোরে কামাল ও তার পরিবার সেই দৃশ্য দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। স্থানীয়রা জানায়, ঘটনাটি পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে করা হয়ে থাকতে পারে। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মোর্শেদুর রহমান বলেন, দুই পুকুরে প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ ছিল আমার। সব মইরা শেষ, ১৫ বছরের জমানো পুঁজি সব শেষ। যে আমার এই ক্ষতি করছে আমি তার বিচার চাই, আমার ক্ষতিপূরণ চাই। স্থানীয় ইউপি সদস্য তাফাজ্জল হোসেন বলেন, পোশাক শ্রমিক কামাল দীর্ঘদিনের জমানো টাকায় মাছ চাষ শুরু করেছিল।
সে খুব সহজসরল একটা ছেলে। প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ মরাতে তার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। যে এই ঘৃণ্য কাজ করেছে তাকে খুঁজে বের করে তার শাস্তি দাবি করছি। ত্রিশাল থানার ওসি মনসুর আহাম্মদ জানান, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।