লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের পূর্ব সোনাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছিল মরিয়ম আক্তার নিশা নামে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। ঘটনার ২০ দিন পর গত বুধবার রাতে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি।
এর আগে রায়পুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির শিক্ষকরা নিসাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে দেখতে গেলে সে তার ম্যাডামকে (প্রধান শিক্ষিকা) উদ্দেশ্য করে বলেছিল, ম্যাডাম আমার বইগুলো ব্যাগের ভিতরেই আছে, একটু যত্ন করে রাখবেন। কারণ, আমিতো ক্লাসে আসবো। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসি সুমি বলেন, গত ২২ জানুয়ারি দুপুরে বিদ্যালয়ের ছাদে খেলাধুলা করছিল কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারগুলো ১১ হাজার ভোল্টেজের হওয়ায় ওই তারের সংস্পর্শে মরিয়ম ও হাফসা নামে দুই শিক্ষার্থী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দগ্ধ হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে অবস্থার অবনতিতে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজধানী ঢাকায় পাঠান কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় মরিয়মের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী ভবনের বাসিন্দারা জানান, ছাদের উপর দিয়ে পল্লী বিদ্যুৎ হাই ভোল্টেজের লাইন নেয়ার সময় তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জটিল বাবু বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির কাউকে বিষয়টি অবহিত করেননি।
এমনকি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকেও না। এর আগেও একবার আহত হয়েছিল এক শিক্ষার্থী। তার পর থেকে বিদ্যালয়ের ছাদে প্রবেশ পথের দরজাটি তালাবদ্ধ থাকতো। কিন্তু, ঘটনার দিন অর্থাৎ গেল ২২ জানুয়ারি সেই শিক্ষক জটিল বাবু অজ্ঞাত কারণে ছাদের দরজা খোলা রেখে দূরে কোথাও চলে যাওয়াতেই এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক জটিল বাবু পলাতক রয়েছে বলে জানা যায়। এদিকে মরিয়মের পরিবারের পক্ষ থেকে তার মামা আবদুর রহমান জানায়, সঠিক বিচার পেতে দ্রুত সম্ভব আমরা রায়পুর থানায় হত্যা মামলা করবো।