ঋতুরাজ বসন্ত আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে পর্যটকদের ঢল নেমেছিলে কক্সবাজারে। এই পর্যটনশহরে সমুদ্রের ঢেউ আর ভালোবাসার আবেগ একসঙ্গে মিশে গিয়ে তৈরি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজারো পর্যটক এই দিনে প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে উপভোগ করছেন বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। গত শুক্রবার সমুদ্রসৈকতের প্রধান তিন পয়েন্ট কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণিতে গিয়ে দেখা যায়, ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে অনেকেই ফুল, উপহার ও বেলুন হাতে সাগরপাড়ে সময় কাটান।
কেউবা বসন্তের হলুদ শাড়ি ও পাঞ্জাবিতে মেতে উঠেছেন ছবি তোলার আনন্দে। হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে চলছে বিশেষ আয়োজন, আর কফিশপ ও রেস্তোরাঁগুলোও দম্পতি ও তরুণ-তরুণীদের উপচে পড়া ভিড়। ঢাকা থেকে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সানি শাহরিয়ার বলেন, ‘ভালোবাসার দিনটা বিশেষভাবে কাটাতে কক্সবাজারে এসেছি। সমুদ্রের ঢেউ আর প্রিয় মানুষ, সব মিলিয়ে দিনটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। রাজশাহী থেকে আসা নবদম্পতি শাওন ও সানিয়া বলেন, আমাদের বিয়ের পর প্রথম ভালোবাসা দিবস কাটাচ্ছি কক্সবাজারে। এখানে আসার অনুভূতি সত্যিই অন্যরকম।
সৈকতের বাতাস আর ঢেউয়ের শব্দ আমাদের সময়টাকে আরো রোমান্টিক করে তুলেছে। কুমিল্লা থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী আলী মোহাম্মদ বলেন, ‘শুধু প্রেমিক-প্রেমিকাই নয়, পরিবার নিয়েও এখানে সময় কাটানো দারুণ লাগছে। শিশুরা আনন্দ করছে, আমরাও প্রকৃতির মাঝে একটুখানি স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছি।’ পর্যটকদের এই বাড়তি ভিড়ে খুশি পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও হোটেল মালিকদের মতে, এ বছর বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসের মিলিত আনন্দে পর্যটকদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর রয়েছে। বসন্তের বাতাস আর ভালোবাসার উষ্ণতা মিলিয়ে কক্সবাজারের পরিবেশ হয়ে উঠেছে স্বপ্নীল ও রঙিন। হোটেল-মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ‘বসন্তের শুরুতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল আমাদের জন্য বেশ ইতিবাচক। আশা করছি গ্রীষ্মকালেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে, যা কক্সবাজারের পর্যটনশিল্পকে আরও চাঙা করবে।’
সৈকতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিচকর্মী, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ডকর্মীরা নিয়মিত কাজ করছেন। বিচকর্মীদের সহকারী সুপারভাইজার বেলাল হোসেন বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকদের সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে আমরা রাতদিন কাজ করে যাচ্ছি। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (পর্যটন সেল) তানভীর হোসেন বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সার্বক্ষণিক সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। বিচকর্মী, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ডকর্মীরা পর্যটক সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন এবং কারো অভিযোগ কিংবা তথ্যের প্রয়োজন হলে সমুদ্রসৈকতের প্রতিটি পয়েন্ট তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্র সচল।