ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মানসিক ভারসাম্যহীনদের নিয়ে এমপির বাসায় উঠলেন সমন্বয়ক

মানসিক ভারসাম্যহীনদের নিয়ে এমপির বাসায় উঠলেন সমন্বয়ক

টাঙ্গাইলে ছাত্র প্রতিনিধির পরিচয় ব্যবহার করে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জোয়াহেরুল ইসলামের (ভিপি জোয়াহের) টাঙ্গাইল শহরের ছোটকালীবাড়িস্থ ছয়তলা বিশিষ্ট ভবন জবরদখল করেছেন সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি। গতকাল শনিবার সকালে তিনি বাসার তালা ভেঙে ২০ জন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি নিয়ে ভবনে প্রবেশ করেন। ছাত্র সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি জানান, ফেসবুকে পূর্বঘোষণা দেয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সব নেতাদের বাড়িতে পাগলদের জন্য ‘আশ্রম’ গড়ে তোলা হবে। তারই অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার সকালে তালা ভেঙে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের ছয়তলা ভবনে প্রবেশ করা হয়েছে। ওই বাসায় আল মুকাদ্দাস ফাউন্ডেশনের ২০ জন পাগল রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি জানান, এটাকে জবরদখল বলা যাবে না, কারণ কোনো ব্যক্তি বিশেষের ব্যবহারের জন্য ভবনটি নেয়া হয়নি। সমাজের অবহেলিত পাগলদের জন্য আশ্রম করা হচ্ছে। এটাকে অন্য সমন্বয়করা তাকে সমর্থন দিয়েছেন বলে জানান তিনি। তিনি আরো জানান, জেয়াহেরুল ইসলামের পক্ষ থেকে একজন লোক এসে জানায় ‘বাসা না ভেঙে সেখানে যেন আশ্রম করা হয়’। তার প্রস্তাব অনুযায়ী পাগলদের আশ্রমই তৈরি করা হয়েছে। তবে এ কথা কে বলেছে তার নামণ্ডপরিচয় বলতে পারেন নি সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি। আবাসিক এলাকায় পাগলের আশ্রম তৈরি করায় স্থানীয়রা অস্বস্তি প্রকাশ করলেও তারা প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা। এক প্রশ্নের উত্তরে সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি জানান, আবাসিক এলাকার মানুষের জীবনযাত্রায় যদি পাগলদের কোনো প্রভাব পড়ে তাহলে যারা বেশি পাগল তাদেরকে অন্যকোনো আওয়ামী লীগের নেতার বাসায় স্থানান্তর করে কম পাগলদের এখানে রাখা হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে টাঙ্গাইলের সমন্বয়ক আল আমিন জানান- এটি কোনো ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। তাছাড়া মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছিল- তাই বলে তিনি বিশেষ সুবিধা নেবেন এটা কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এটা ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনের মূল স্পিরিটের সঙ্গে যায় না। বর্তমানে কেউ সমন্বয়ক পরিচয় দিতে পারবে না। কারো বাড়ি দখল করার কোন কার্যক্রম তারা হাতে নেননি। যে কেউ এরকম কাজ করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানভীর আহম্মেদ জানান, বিষয়টি তিনি লোকমুখে শুনেছেন। যেহেতু ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীরা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে ফেলেছেন, সেখানে ছাত্র প্রতিনিধি বা সমন্বয়ক বলতে আর কিছু থাকে বলে তার মনে হয় না। এর চেয়ে বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হন নি।

উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জোয়াহেরুল ইসলামের(ভিপি জোয়াহের) বাসায় ঢুকে লুটপাট ও ভাঙচুর চালায়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম (ভিপি জোয়াহের) স্বপরিবারে আত্মগোপনে রয়েছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত