ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় লবণ উৎপাদন বন্ধ

এবার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি
বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় লবণ উৎপাদন বন্ধ

বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজার উপকূলে লবণ উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদনের সরকারি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন- বিসিকের কক্সবাজার লবণ শিল্প উন্নয়ন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য মতে, চলতি মৌসুমের ১৭ মে পর্যন্ত লবণ উৎপাদন হয়েছে ২২ লাখ ৫১ হাজার ৬৫১ টন। এরপর আবহাওয়া পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় চাষিরা মাঠে নামতে পারেননি। সরকারিভাবে এ বছর দেশে লবণের চাহিদা ধরা হয়েছে ২৬ লাখ ১০ হাজার টন। গত বছর মৌসুম শেষে লবণ উৎপাদন হয়েছিল ২৪ লাখ ৩৭ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন।

চাষিরা বলছেন, এ বছর উৎপাদনের শুরুতে লবণের দাম কম ছিল। মিল মালিকেরা সিন্ডিকেট করে দাম কমিয়ে রাখার অভিযোগ ওঠে। শেষ সময়ে দাম একটু বাড়লেও তা উৎপাদন খরচের চেয়ে কম ছিল। চাষিরা জানান, চৈত্র মাসের শেষদিন থেকে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছে। বৈশাখ মাসের প্রখর রোদ লবণ উৎপাদনের ভর মৌসুম ধরা হয়। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় সে সুযোগ তারা এবার পাননি। প্রতিবছর নভেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত লবণ উৎপাদনের মৌসুম ধরা হয়। এ সময়ে সমুদ্র উপকূলের জমিতে সাগরের লোনা পানি আটকিয়ে পলিথিন বিছিয়ে রোদে শুকিয়ে লবণ উৎপাদন করা হয়। চকরিয়া উপজেলার রামুপুর এলাকার চাষি নজরুল ইসলাম ও শহীদুল্লাহ জানান, বৈশাখের পুরো মাস ও জ্যেষ্ঠ মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত লবণ উৎপাদনের মোক্ষম সময়। এ সময় প্রখর রোদে দ্বিগুণ লবণ উৎপাদন হয়। কিন্তু এ বছর আবহাওয়ার প্রতিকূল অবস্থার কারণে উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

সম্প্রতি কক্সবাজারে এসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস লবণ চাষিদের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু মৌসুমের শেষ পর্যায়েও লবণের মূল্য নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানান চাষিরা। চাষিদের অভিযোগ, লবণ মিলমালিক ও ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে লবণের দাম কমিয়ে রেখেছে। কক্সবাজার লবণচাষি ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী বলেন, মৌসুমের শুরু থেকেই লবণের দাম ছিল না। এ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ধর্ণা দিয়ে কোনো লাভ হয়নি। তার ওপর বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টির কারণে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাষিরা।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) কক্সবাজার লবণ শিল্প উন্নয়ন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে কক্সবাজার সদর, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়া, ঈদগাঁও ও টেকনাফে ৫৯ হাজার ৯৯ একর এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা ও পটিয়ায় ১০ হাজার ৮৯ একর জমিতে লবণের চাষ হয়েছে। গত রোববার পর্যন্ত ৫ মাসে লবণ উৎপাদিত হয়েছে ১৮ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৩ টন।

দেশে এ বছর লবণের চাহিদা ও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ লাখ ১০ হাজার টন। বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক জাফর ইকবাল ভূঁইয়া বলেন, এক মাস ধরে বৈরী আবহাওয়া ও বৃষ্টির কারণে লবণ উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটেছে। ফলে আবহাওয়া অনুকূলে না আসায় উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত