গেল বছর দেরিতে ২৭ এপ্রিল বৃষ্টিপাত হয়েছিল। ফলে খড়ার কারণে পোকামাকড় ও রোগ-বালাইয়ের কবলে পড়ে হবিগঞ্জের মাধবপুরে ৫টি চা-বাগান। সেবার উৎপাদনও শুরু হয়েছিল দেরিতে। এর আগের দুই বছরও বৃষ্টিপাত হয় দেরি করে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি ও মার্চের মাঝামাঝিতে। কিন্তু এবার উৎকৃষ্ট সময়ে গত ১০ মার্চ থেকে টানা তিন দিন বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে চা-বাগানগুলোতে সতেজ ভাব দেখা দিয়েছে। চা-শিল্পে এই বৃষ্টির নাম গোল্ডেন শাওয়ার। এর প্রভাবে রুক্ষ বাগানে সবুজের আহ্বানে নতুন কুঁড়ির আগমন ঘটছে। এতে পহেলা এপ্রিল থেকেই তাড়াতাড়ি উৎপাদন শুরু হয়েছে। মাধবপুর উপজেলার সুরমা চা-বাগানের ব্যবস্থাপক বাবুল সরকার জানান, যেসব চা-বাগানে সেচব্যবস্থা রয়েছে তাদের চা উৎপাদন মৌসুম শুরু হয় অনেক আগে। ফিনলে কোম্পানির চা-বাগানগুলোতে এরইমধ্যে চা উৎপাদন শুরু হয়ে গেছে। তবে যেসব বাগানে সেচব্যবস্থা নেই তাদের অপেক্ষা করতে হয় বৃষ্টির জন্য। এবার কয়েক দিনের বৃষ্টিতে মৌসুম আগাম শুরু হয়েছে। তিনি আরও জানান, গোল্ডেন শাওয়ারে ফাল্গুন ও চৈত্র মাসের যে সম্ভাব্য খড়া সেই সময়ের খড়ায় চা-গাছকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছে। পোকামাকড়ের উপদ্রব কম হয়েছে। সাধারণত ডিসেম্বর মৌসুমের শেষে চা-গাছ ছাঁটাই বা প্রোনিংয়ের পর নিয়মানুযায়ী ২-৩ মাস বাগানে চা-পাতা উৎপাদন বন্ধ থাকে। ফলে চা কারখানাও অলস থাকতে হয়। সেচ সুবিধা ও বৃষ্টিপাতের কারণে নতুন কুঁড়ি গজানোর পর আনুষ্ঠানিকভাবে চা-পাতা চয়নের মাধ্যমে শুরু হয় চায়ের উৎপাদন। এই সময়ের বৃষ্টি চা সংশ্লিষ্টদের জন্য এক আনন্দময় প্রাপ্তি। প্রতি বছর এই গোল্ডেন শাওয়ারের দেখা না মিললেও কয়েক বছর পর এ বছর হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া, সুরমা, জগদীশপুর, বৈকুণ্ঠপুর ও নোয়াপাড়া চা-বাগানগুলোতে আশির্বাদ হয়ে এসেছে এই গোল্ডেন শাওয়ার।