পাবনায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণে নতুন প্রযুক্তি ডাব্লিউ এমএম পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করেছে। ফলে নির্মিত রাস্তার আয়ুষ্কাল পুর্বের থেকে ৫০ ভাগ বৃদ্ধি পাবে জানা গেছে। জানা গেছে, পাবনায় গ্রামীণ সড়ক প্রসস্ত ও শক্তিশালী করন প্রকল্পের অধীনে জেলার আটঘড়িয়া উপজেলার দেবোত্তর থেকে একদন্ত বাজার পর্যন্ত ৭ হাজার ৬০০ মিটার রাস্তার কাজ ডাব্লিউ এমএম পদ্ধতিতে চলমান রয়েছে। প্রায় ৭ হাজার মিটার রাস্তার কাজ শেষে হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) পাবনার সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী এএইচএম রবিউল আওয়াল জানান, রাস্তাটির গুণগত মান পরীক্ষায় দেখা যায়, ডাব্লিউ এমএম পদ্ধতিতে বালি খোয়া ও পানি দিয়ে ১০-১২ দিন মিশ্রনের মাধ্যমে রাস্তায় ফেলে রোলারের মাধ্যমে কম্পেকশন করা হয়েছে। পূর্বের ডাব্লিউ বিএম পদ্ধতির পরিবর্তে ডাব্লিউ এমএম পদ্ধতিতে রাস্তাটির কাজ হচ্ছে। যার ফলে অতীতে চুন সুড়কির মাধ্যমে ইমারত নির্মাণের মতো শক্ত হচ্ছে। ষোল ফিট প্রসস্তের রাস্তা বর্তমানে দুই ফিট বৃদ্ধি করে আঠার ফিট করা হয়েছে। সিডিউল মোতাবেক রাস্তাটির গভীরতা ৬ ইঞ্চি থাকলেও গড়ে অর্ধ ইঞ্চি বেশি হয়েছে। যানবাহন চলাচলে এটা আরো কম্পেকশন হতে পারে জন্য গভীরতা বেশি দেয়া হেেছ বলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বর্তমানে রাস্তাটি ৪০ মি.মি কার্পেটিংয়ের কাজ করলে রাস্তাটির কাজ সম্পূর্ণ শেষ হবে। সরেজমিনে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গ্রামীন অবকাঠামো ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে রাস্তাটির গুরুত্ব অপরিসীম। একদন্ত ইউনিয়নের কেদার পাড়া গ্রামের হাজী আব্দুল মালেক বলেন, এ রাস্তাটি নির্মানের আগে আমরা আমাদের এলাকার উৎপাদিত ফসল ও হাটবাজারে মাটির পিচ্ছিল রাস্তা বহন ও চলাচল করেছি। বৃষ্টির সময় বহু কষ্ট করতে হয়েছে। বর্তমানে সেই অবস্থা আর নেই। তাছাড়া এ রাস্তা নির্মাণের ফলে গ্রামীন অর্থনীতির উন্নয়ন হয়েছে। বেকারত্ব দুরিকরণেও ভুমিকা পালন করছে এ রাস্তা। এলাকার স্বল্প শিক্ষিত বেকার যুবক রিকশা ভ্যান, অটো রিকশা চালিয়ে তারা জীবিকা নির্বাহ করছে।
অনেকে সকালে কৃষি কাজ শেষে রিকশা-অটোরিকশা চালিয়ে বাড়তি আয়ের পথ পেয়েছে। কলেজছাত্র আবদুস শুকুর জানান, এ রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে ঢাকা ছাড়াও আটঘড়িয়া উপজেলার সফঙ্গ অন্যান্য উপজেলার যোগাযোগ হাতের মুঠোয় চলে আসবে। শিক্ষাসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি বাড়বে। পাবনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মনিরুল ইসলাম জানান, বর্তমান প্রযূক্তিতে নির্মিত রাস্তা পূর্বের তুলনায় ৫০ ভাগ আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পাবে। রাস্তাটি প্রশস্ত করার কারণে দুর্ঘটনা হ্রাস পাবে। এছাড়া পূর্বে ২৫ মি.মি. কার্পেটিং করা হতো বর্তমানে সেটা ৪০ মি.মিটারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। গ্রামীণ অবকাঠামো, আর্থসামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষা ও বেকারত্ব দূরিকরণ ছাড়াও জেলার এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলা, ইউনিয়ন এবং পাবনার সঙ্গে অন্যান্য জেলাসহ রাজধানী ঢাকার সঙ্গে স্বল্প খরচ ও স্বল্প সময়ে যোগাযোগ ব্যাবস্থা উন্নয়নের ক্ষেত্রে পাবনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সচেষ্ট রয়েছে। এ ক্ষেত্রে নির্মাণাধীন কাজ গুলো সঠিকভাবে তদারকি করা হচ্ছে। আরো কিছু ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা রয়েছে বাজেট প্রাপ্তি সাপেক্ষে সে কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। নির্মিত রাস্তার আয়ুষ্কাল বৃদ্ধির জন্য নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।