প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়ানোয় আতঙ্কে গত বুধবার বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপ বাড়ান। এতে শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হয়। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার আতঙ্ক কেটে শেয়ারবাজারে বিক্রির চাপ কমে ক্রেতার আধিক্য দেখা যায়। এতে বড় উত্থান হয়েছে শেয়ারবাজারে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৯৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ২ শতাংশ। এছাড়া ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা। অথচ একদিন আগে বাজারটিতে ৯৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে এবং প্রধান মূল্যসূচক কমে ৩ শতাংশ। একই দিনে বাজার মূলধন কমে ১০ হাজার কোটি টাকা। বড় দরপতনের পর শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হলেও মতিঝিলের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিনিয়োগকারীরা। কাফনের কাপড় পরে করা এই বিক্ষোভ মিছিলের নাম দেওয়া হয় ‘কাফন মিছিল’। শেয়ারবাজারের লেনদেন শেষে আয়োজন করা এই কাফন মিছিল থেকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এবং ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) চেয়ারম্যান আবু আহমেদের অপসারণের দাবি জানানো হয়। দুই সপ্তাহ আগে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার গভীর রাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে ভারত। এতে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ভারতের এই হামলার পর পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালিয়েছে। এ হামলায়ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান এই পরিস্থিতিতে গত বুধবার দেশের শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন হয়। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ১৪৯ পয়েন্ট কমে যায়।
এছাড়া বাজার মূলধন কমে ১০ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে এমন দরপতন হলেও ভারতের শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের উত্থান হয়। এ পরিস্থিতিতে গতকাল দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের বড় উত্থানের দেখা মেলে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকাও বড় হতে থাকে। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকয়টি মূল্যসূচকের বড় উত্থান দিয়ে দেনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে সব খাত মিলিয়ে ডিএসইতে ৩৭৭ কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেরেছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০টির। এছাড়া ৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২১২টির শেয়ারের দাম বেড়েছে এবং ২টির দাম কমেছে। এছাড়া একটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৮০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ২টির দাম কমেছে এবং ২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।