ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সামান্য ব্যথাতেই প্যারাসিটামল খাওয়ার ঝুঁকি

সামান্য ব্যথাতেই প্যারাসিটামল খাওয়ার ঝুঁকি

জ্বর আসলো কি আসলো না, শরীর একটু গরম হলেই চট করেই প্যারাসিটামল খেয়ে নেন এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। কেবল জ্বর নয়, হাত-পা ব্যথা, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা সবকিছুতেই ভরসা সস্তা এই ব্যথানাশক ওষুধ। তাই প্রতিটি ঘরে এর সরব উপস্থিতি মেলে। অনেকে ডোজ না মেনে ঘন ঘনই খেয়ে ফেলেন প্যারাসিটামল। আর তাতেই বাড়ছে বিপদ। অতিরিক্ত প্যারাসিটামল খাওয়ায় শরীরের কী কী ক্ষতি হতে পারে তা নিয়ে গবেষণা করেছেন ব্রিটেনের নটিংহাম ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। আর এই গবেষণার ফল আতঙ্কের বটে।

বিগত কয়েক বছর ধরে সমীক্ষা চালিয়ে গবেষকেরা দাবি করছেন, প্যারাসিটামল নির্দিষ্ট ডোজ মেনে না খেলে বা যখন তখন বেশি মাত্রায় খেয়ে ফেললে তা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। দীর্ঘদিন বেশি মাত্রায় প্যারাসিটামল খেলে তা লিভার ও কিডনির ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। এতে পেটে গোলমাল তো হবেই, সেসঙ্গে বাড়বে কিডনিতে পাথর জমার আশঙ্কাও। গবেষকরা বলছেন, বেশি প্যারাসিটামল খেলে বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরার মতো সমস্যা হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে প্যারাসিটামল খেতে থাকলে ঘন হলুদ রঙের প্রস্রাব, তলপেটে তীব্র যন্ত্রণা দেখা দিতে পারে। এগুলো লিভার খারাপ হওয়ার উপসর্গ।

এমনকি কিছু ক্ষেত্রে অ্যালার্জির সমস্যাও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন গবেষকরা। নটিংহামের গবেষকরা ৫০ থেকে ৬০ বছর বয়সিদের নিয়ে সমীক্ষাটি চালান। তারা দেখেন, কথায় কথায় প্যারাসিটামল খাওয়ার অভ্যাস যাদের রয়েছে, তাদেরই পরবর্তী সময়ে পেপটিক আলসার ধরা পড়েছে। এমনকি, কিডনির ক্রনিক রোগেও আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। হার্টের অসুখ ও হাইপারটেনশন ধরা পড়েছে বেশ কয়েক জনের। ২০১৬ সালে ‘দ্য ল্যানসেট’ বিজ্ঞানপত্রিকায় প্যারাসিটামল নিয়ে একটি গবেষণার খবর ছাপা হয়েছিল। যেখানে গবেষকরা বলেছিলেন, প্রায় ৫৮ হাজার মানুষকে নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয় কয়েক বছর ধরে।

তাতে দেখা যায়, প্যারাসিটামল কখনই ব্যথার উপশম করতে পারে না। বর্তমানে নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ওয়েইয়া ঝাংও একই কথা বলেছেন। তার মতে, ২০১৮ সাল থেকে প্রায় লাখ চারেক আর্থ্রাইটিসের রোগীকে লাগাতার প্যারাসিটামল খাইয়ে দেখা গিয়েছে, তাদের গাঁটের যন্ত্রণা কমেনি। কয়েক জনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ডোজে প্যারাসিটামল কাজ করেছে মাত্র। তবে বেশিরভাগের শরীরেই তা কাজ করেনি।

গবেষকরা বলছেন, প্যারাসিটামল এমনিতে নিরাপদ ওষুধ। চিকিৎসকের পরামর্শে যদি নির্দিষ্ট ডোজে তা খাওয়া হয়, তাহলে উপকার হতে পারে। কিন্তু যদি বেশি ডোজে বিধি না মেনে খাওয়া হয়, তাহলে ক্ষতি হতে পারে। শরীরের ওজন বুঝে দিনে ৩ থেকে ৪ গ্রামের বেশি প্যারসিটামল কখনই খাওয়া উচিত নয়। দেহের প্রতি কেজি ওজন অনুযায়ী, ১০ থেকে ১৫ মিলিগ্রাম ওষুধ খাওয়া যেতে পারে, এর বেশি নয়।

ব্যথা,প্যারাসিটামল
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত